আরো পড়ুন: ডিজিটাল মার্কেটিং ফ্রিতে করে মাসে লক্ষ টাকার উপরে ইনকাম করার সেরা উপায়
ই-পাসপোর্ট কি ?
গ্রাহকের সকল ধরনের ইনফরমেশন এবং যাবতীয় বায়োমেট্রিক্স তথ্যের এক অনলিপি হলো ই-পাসপোর্ট । আপনার সকল ধরনের ইনফরমেশন থেকে শুরু করে দশটি আঙ্গুলের ছাপ এবং 2 চোখের আইরিশের
গঠন প্রণালী সংরক্ষণের মাধ্যমে ইপাসপোর্ট তৈরি করা হয়ে থাকে । আমরা সকলেই
হয়তো জানি পৃথিবীর প্রতিটা মানুষ দেখতে অনেকটা একই আকৃতির হলেও গঠনের দিক থেকে সবাই সবার দিক থেকে আলাদা । সহজ কথায় বলতে গেলে আপনার হাতের আঙ্গুলের ছাপ এবং অন্য কারো হাতের আঙ্গুলের ছাপ কিন্তু কখনোই এক হবে না এবং আপনার চোখের আইরিশের গঠন এবং অন্যের চোখে আরশের গঠন কিন্তু এক হবে না । অন্যজনের থেকে তো দূরের কথা আপনার এক আঙ্গুলের ছাপ আরেক আঙ্গুলের সাথেই মিলবে না । আর এগুলোকে ডাটাবেজে সংরক্ষণের মাধ্যমে এছাড়াও আপনার যাবতীয় ইনফরমেশন এর ভিত্তিতে ই পাসপোর্ট তৈরি করা হয়ে থাকে । ই পাসপোর্ট সকলের জন্য এখন উন্মুক্ত অর্থাৎ দেশের ভূখন্ডে বসবাসরত প্রায় প্রতিটি নাগরিক ইপাসপোর্ট করতে পারবে । ( ই-পাসপোর্ট কি ? )
এমআরপি পাসপোর্ট এবং ই পাসপোর্ট এর মধ্যে বিভিন্ন ধরনের পার্থক্য আমরা লক্ষ্য করতে পেড়েছি তার মধ্যে অন্যতম একটি হল এমআরপি পাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে প্রথম দুইটি পাতায় যে তথ্য দেওয়া থাকে ইপাসপোর্ট এর ক্ষেত্রে প্রথম দুইটি পাতায় সে তথ্য দেওয়া হয়নি । এছাড়াও এখানে ডাটাবেজে সংরক্ষণ করা হবে আবেদনকারীর তিন ধরনের ছবি এবং হাতের আঙ্গুল এর ছাপ ও 2 চোখের গঠন । ই পাসপোর্ট অত্যন্ত একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা যার মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিক তাদের information এর মাধ্যমে ই পাসপোর্ট তৈরি করতে পারবে । যার মাধ্যমে পাসপোর্ট আবেদনকারীরা তাদের বিভিন্ন ডকুমেন্ট দিয়ে ই পাসপোর্ট তৈরি করে নেয় যে । ইপাসপোর্ট এর পেজগুলো অনেকটা শক্ত অর্থাৎ এমআরপি পাসপোর্ট এর তুলনায় ই পাসপোর্ট এর কাগজ কিন্তু অনেকটা বেশি শক্ত পোক্ত । আরো একটি বিষয় আপনাদের মাঝে তুলে ধরি আর সেটি হল MRP পাসপোর্ট বলতে বুঝায় এনালগ পাসপোর্টকে আর ইপাসপোর্ট মূলত একটি ডিজিটাল পাসপোর্ট । ( ই পাসপোর্ট তথ্য যাচাই )
ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা ?
ই-পাসপোর্ট এর সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটার মাধ্যমে খুব সহজেই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ভ্রমনকারী যে কোন দেশে ভ্রমন করতে পারবে । যারা ই-পাসপোর্ট ব্যবহার করে যাতায়াত করবে তারা মূলত ই গেট ব্যবহার করবে । আরি ইগেট ব্যবহার করার ফলে তাদেরকে ইমিগ্রেশনে লাইনে দাঁড়াতে হবে না মেশিনের মাধ্যমেই তারা ইমিগ্রেশন কমপ্লিট করতে পারবে এটা কিন্তু খুবই একটি ভালো দিক । অনেক সময় দেখা গেছে যাতায়াতকারীদের ইমিগ্রেশনের লাইনে দাঁড়াতে হয় এতে করে কিন্তু অনেকটা সময় চলে যেতে পারে কিন্তু ই পাসপোর্ট এর মাধ্যমে ই গেট দিয়ে যাতায়াতে তাদেরকে বেশি সময় লাগবে না ইমিগ্রেশন অফিস পার হতে । ইগেটের মাধ্যমে আপনাদেরকে পারাপারের সময় যে বিষয়গুলো লাগবে সেটি হচ্ছে , পাসপোর্ট রাখার সাথে সাথে আপনাদেরকে আঙ্গুলের ছাপ এবং 2 চোখের
আইরিশ দিয়ে পার হতে হবে । এতে কিন্তু বেশি সময় লাগবে না অনেকটা সময়
বেঁচে যাবে । বর্তমান সময়ে অনেক দেশে কিন্তু এসকল সুবিধার কারণে ই পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু করেছে । ( ই-পাসপোর্ট এর সুবিধা কি ? )
ই-পাসপোর্ট তৈরির জন্য কত টাকা খরচ করতে হবে ?
ই-পাসপোর্ট তৈরি করার জন্য আপনাদেরকে কত টাকা খরচ করতে হবে ? সে বিষয়ে কিন্তু একটি প্রশ্ন থেকে যায় আর সেটি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো নিচের আলোচনায় ।
৪৮ পাতা ৫ বছর মেয়াদ
৫ বছর মেয়াদী ই-কমার্স পাসপোর্টটি তৈরি করার জন্য এবং ২১ দিনে হাতে পাওয়ার জন্য আপনাকে ব্যাংকে জমা দিতে হবে ৪,০২৫ টাকা । এই একই মেয়াদের পাসপোর্ট দিয়ে আপনি যদি ১০ দিনের জন্য অর্থাৎ ১০ দিনের মাথায় আপনার হাতে ডেলিভারি নেওয়ার জন্য আপনাকে ব্যাংকে জমা দিতে হবে ৬,৩২৫ টাকা । অনেকের ইমারজেন্সি পাসপোর্ট তৈরি করার প্রয়োজন হয়ে পড়ে সেক্ষেত্রে তাদেরকে দুই দিনের মাথায় পাসপোর্ট ডেলিভারি করানোর জন্য খরচ করতে হবে ৮,৬২৫ টাকা । আরেকটি কথা জেনে রাখুন পাঁচ বছর মেয়াদী এই ই-পাসপোর্টটি ৪৮ পাতার একটি পাসপোর্ট থাকবে । ( ৪৮ পাতার পাসপোর্ট খরচ ৫ বছর )
৪৮ পাতা ১০ বছর
৪৮ পাতার ইপাসপোর্ট ১০ বছর মেয়াদি ২১ দিনের মাথায় তৈরি করার জন্য আপনাকে ব্যাংকে জমা দিতে হবে ৫,৭৫০ টাকা । দশ দিনের মধ্যে আপনারা যদি ই-পাসপোর্টটি আপনাদের হাতে আনতে চান তাহলে এক্ষেত্রে আপনাদেরকে ব্যাংকে জমা দিতে হবে ৮,০৫০ টাকা । এছাড়া আপনারা যদি আরও তাড়াতাড়ি অর্থাৎ দুই দিনের মধ্যে ই-পাসপোর্ট তৈরি করতে চান , সে ক্ষেত্রে আপনাদের খরচ করতে হবে ১০,৩৫০ টাকা ।
( ৪৮ পাতার পাসপোর্ট খরচ ১০ বছর মেয়াদ )
৬৪ পাতা ৫ বছর
অপরদিকে ৫ বছর মেয়াদী ৬৪ পাতার ই পাসপোর্ট আপনি যদি স্বাভাবিক সময়ে বা ২১ দিনের মধ্যে আপনার হাতে পেতে চান তাহলে আপনাদেরকে খরচ করতে হবে ৬,৩২৫ টাকা । এমনকি দশ দিনের মধ্যে আপনাদের হাতে পেতে চাইলে ব্যাংকে জমা দিতে হবে ৮,৬২৫ টাকা । ৬৪ পাতার ইপাসপোর্টটি আপনাদের হাতে দুই দিনের মধ্যে পেতে হলে ফি দিতে হবে ১২,০৭৫ টাকা । ( ৬৪ পাতার পাসপোর্ট খরচ ৫ বছর মেয়াদ )
৬৪ পাতা ১০ বছর
৬৪ পাতার ইপাসপোর্ট ১০ বছরের মেয়াদী স্বাভাবিক সময় বা ২১ দিনের মধ্যে তৈরি করার জন্য আপনাকে ফি দিতে হবে ৮,০৫০ টাকা । ১০ দিনের মধ্যে তৈরি করতে হলে খরচ করতে হবে ১০,৩৫০ টাকা । সুপার এক্সপ্রেস ডেলিভারি বা দুই দিনের মধ্যে তৈরি করার জন্য প্রদান করতে হবে ১৩,৮০০ টাকা । এছাড়াও আপনারা সোনালী ব্যাংক , ইসলামী ব্যাংক সহ আরো বেশ কিছু ব্যাংক রয়েছে যেখানে টাকা জমা দিতে পারবেন । তবে অবশ্যই টাকা জমা দেওয়ার পূর্বে বিষয়গুলো ভালোভাবে জেনে নিবেন । ( ৬৪ পাতার পাসপোর্ট খরচ ১০ বছর মেয়াদ )
ই-পাসপোর্ট আবেদন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
ইপাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে আপনাদেরকে প্রয়োজনীয় যে কাগজপত্র গুছিয়ে নিতে হবে সেগুলো সম্পর্কে সর্বদা অবগত থাকতে হবে । সর্বপ্রথম আপনাকে সামারি পেইজ রাখতে হবে । অর্থাৎ ই পাসপোর্ট এর জন্য একটি আবেদনকারি পেজ । এরপরে আপনি যে মেয়াদের ইপাসপোর্ট বানাতে ইচ্ছুক সেই পাসপোর্ট বানানোর নির্ধারিত ফি ব্যাংকে প্রদান করতে হবে এবং তার রশিদ আপনাকে গ্রহণ করে নিতে হবে । ব্যাংক প্রদত্ত যে রশিদ পাওয়া যাবে সেটিকে হারানো যাবে না । আপনাকে অবশ্যই জমা দিতে হবে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি । আর এখন যদি দেখেন যে আপনার ১৮ বছরের কম হয়েছে তো সে ক্ষেত্রে আপনার এনআইডি কার্ড নেই তখন কিন্তু আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন । আর যদি দেখে থাকেন যে এনআইডি কার্ডও রয়েছে আবার জন্ম নিবন্ধন কার্ডও রয়েছে সে ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই এনআইডি কার্ডের ফটোকপি দিয়ে দিবেন । আর যদি আপনার পুরনো পাসপোর্ট থেকে থাকে তাহলে পুরনো পাসপোর্ট এর মেইন পেইজের ফটোকপি দিতে হবে । আপনাকে অবশ্যই নাগরিক সনদপত্র প্রদান করতে হবে অর্থাৎ যেটিকে আমরা চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট বলে থাকি আর এটিকে আপনারা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সংগ্রহ করে নিবেন । আপনি যদি কোন পেশার সাথে সংযুক্ত থাকেন তাহলে সেটার প্রমাণ হিসেবে পেশা সংক্রান্ত তথ্য বা ট্রেড লাইসেন্স এর ফটোকপি দিতে হবে । এছাড়াও আপনাকে বিদ্যুৎ বিলের ফটোকপি তার সাথে প্রদান করতে হবে । এছাড়াও আরো একটি বিষয় আপনার অবশ্যই মনে রাখবেন আর সেটি হল আপনারা যখন এমআরপি পাসপোর্ট বানিয়ে ছিলেন এবং সেটির রিনিউ করার জন্য এখন এমআরপি পাসপোর্ট জমা দেওয়ার পরিবর্তে আপনারা ই-পাসপোর্ট গ্রহণ করবেন । এছাড়াও আপনার এই প্রয়োজনীয় কাগজগুলোর সাথে আপনার পিতা এবং মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি জমা দিতে হবে । উপরের ইনফরমেশনগুলো বা কাগজগুলো ঠিক রেখে আপনি নিজে নিজেও অনলাইনে ইপাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে পারবেন তবে ফিঙ্গারপ্রিন্ট , সিগনেচার এবং দুচোখের আইরিশ দেওয়ার জন্য আপনাদেরকে অবশ্যই আপনাদের নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে । আর এই কাজগুলো কমপ্লিট করার পর সর্বশেষ যে কাজটি থাকবে সেটি হচ্ছে পুলিশ ভেরিফিকেশন সেটিও কমপ্লিট হয়ে গেলে আপনারা পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাবেন । ( ই-পাসপোর্ট অনলাইনে আবেদন জন্য কি কি লাগবে ? )
আশা করি বিষয়টিকে আপনাদের মাঝে খুবই সহজ থেকে সহজতার ভাবে রিপ্রেজেন্ট করতে সফল হয়েছি । আরে ই পাসপোর্ট সম্পর্কে আপনাদের কার কি ধরনের সমস্যা রয়েছে সে বিষয়গুলো আমাদেরকে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন । আশা করি আপনাদের সমস্যাগুলো সংশোধনে অনেকটা এগিয়ে আসতে পারবো ইনশাআল্লাহ ।
0 মন্তব্যসমূহ