Join Our Telegram channel! name='keywords'/> বিড়াল পালার উপকারিতা ও অপকারিতা-বিড়াল সম্পর্কে ইসলাম ও বিজ্ঞান কি বলে?

Ticker

10/recent/ticker-posts

Ads

বিড়াল পালার উপকারিতা ও অপকারিতা-বিড়াল সম্পর্কে ইসলাম ও বিজ্ঞান কি বলে?

বিড়াল একটি ছোট সাইজের প্রাণী। আমাদের মাঝে হয়তো এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না যে সে কিনা বিড়াল প্রাণীটি পছন্দ করে না বা চিনে না ।পোষা প্রাণী গুলু র মধ্যে সবচেয়ে শান্তশিষ্ট প্রাণী হলো বিড়াল। আর সে জন্যই বিড়ালের প্রতি ভালোবাসা রেখে আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবস পালন করা হয় প্রতিবছরের ৮ আগস্ট। ইসলামে এভাবে দিবস ঘিরে বিড়ালের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনের নিয়ম না থাকলেও নবীজি (সা:) ও সাহাবায়ে-কেরামরা বিড়ালের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন। আল্লাহর রাসুল (সা:) যখন অজু করতেন তখন নিজের অজুর পাত্র থেকে বিড়ালকে পানি পান করাতেন। 


বিড়াল পালার উপকারিতা ও অপকারিতা-বিড়াল সম্পর্কে ইসলাম ও বিজ্ঞান কি বলে?


**

হজরত কাবশাহ বিনতে কাব ইবনে মালিক (রা:) থেকে বর্ণিত। তিনি ছিলেন আবু কাতাদাহ (রা:)-এর পুত্রবধূ। আবু কাতাদাহ (রা:) তার নিকট ছিলেন। তিনি তার জন্য অজুর পানি ঢাল লেন। তখন একটি বিড়াল এলো এবং অজুর পাত্র থেকে পানি পান করতে লাগল। আর তিনি পাত্রটি তার জন্য কাত করে ধরলেন যে পর্যন্ত পান করা শেষ না হলো। কাবশাহ (রা:) বলেন, তিনি আমার দিকে তাকিয়ে দেখলেন, আমি তার দিকে চেয়ে আছি। তিনি আমাকে বললেন, আমার ভাতিজি! তোমার কাছে আশ্চর্য লাগছে? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, রাসুলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, বিড়াল নাপাক নয় । এটা তোমাদের আশপাশে ঘন ঘন বিচরণকারী প্রাণী ।

**

আল্লাহর রাসুলের প্রিয় সাহাবি আব্দুর রহমান (রা:) জামার ভেতর পোষা বিড়াল নিয়ে ঘোরাফেরা করতেন। এক দিন তিনি জামার আস্তিনের নিচে একটি বিড়াল ছানা নিয়ে রাসুল (সা:)-এর দরবারে উপস্থিত হন। সে সময়ে বিড়ালটি হঠাৎ করে সবার সামনে বেরিয়ে পরলো। এ অবস্থা দেখে রাসুল (সা:) তাকে রসিকতা করে ‘ ইয়া  আবু হুরায়রা’ অর্থাৎ ‘হে বিড়ালের পিতা’ বলে সম্বোধন করলেন। এরপর থেকে তিনি মূল নামের চেয়ে আবু হুরায়রা নামে খ্যাতি লাভ করেন। আর সেদিন থেকে তিনি নিজেকে আবু হুরায়রা নামেই পরিচয় দিতে পছন্দ করতেন।

**

ইসলামের দৃষ্টিতে বিড়াল পালনে কোনো অসুবিধা নেই। তবে বিড়ালকে পর্যাপ্ত খাদ্যপানীয় সরবরাহ করতে হবে। বিড়ালের প্রতি যথাযথ দয়া-অনুগ্রহ দেখাতে হবে। বিড়ালকে কোনো ধরনের কষ্ট দেওয়া যাবে না। এক মহিলাকে একটি বিড়ালের জন্য আজাব দেওয়া হয়েছে । কারণ বিড়ালটিকে আটকে রাখায় সেটি মারা গিয়েছিল । ফলে সে জাহান্নামে গেছে। বিড়ালটিকে আটকে রেখে সে খাবার-পানীয় দেয়নি । আবার ছেড়েও দেয়নি, যাতে করে জমিনের পোকামাকড় খেয়ে বাঁচতে পারে। (মুসলিম : ৫৭৪৫)। এ হাদিসের ব্যাখ্যায় প্রখ্যাত হাদিস বিশারদ আল্লামা ইবনে হাজার (রহ) বলেন, ইমাম কুরতুবি (রহ:) বলেছেন, এ হাদিস থেকে বিড়াল পালা ও বিড়ালকে বেধে রাখা জায়েজ বলে প্রমাণিত হয়, যদি তাকে খানাপিনা দেওয়ার ব্যাপারে ত্রুটি না করা হয়। 

বিড়াল সম্পর্কে নামাজের বিধান 

মক্কাসহ অসংখ্য গুরুত্বপূর্ণ মসজিদে বিড়ালের অবাধ অনুপ্রবেশ। এরা প্রত্যেক ইবাদতকারীর পাশেই ঘুমায় । গা ঘেঁষে বসে থাকে যত্রতত্র। মানুষের আদর-ভালোবাসায় লাই দিয়ে গড়া অদ্ভুত এই বিলাসপ্রবণ প্রাণী। শরীয়তের বিধান অনুযায়ী বিড়ালের প্রস্রাব নাপাক। যদি কাপড়ে বা জায়নামাজে এক দেরহাম বা তার চেয়ে বেশি পরিমাণ বিড়ালের প্রস্রাব লেগে যায় , তাহলে সেই জায়নামাজ বা কাপড়ে নামাজ আদায় করা না জায়েজ। তবে যদি বিড়ালের প্রস্রাব না লাগে তাহলে শুধুমাত্র বিড়ালের বসার দ্বারা কোনো জায়নামাজ বা কাপড় নাপাক হয় না; কিন্তু বিড়ালের শরীরে ভেজা অপবিত্র কিছু লেগে আছে কিনা তার উপর লক্ষ্য করতে হবে।

বিড়াল পালার ইসলামিক দৃষ্টিতে উপকারিতা গুলো 

∆∆∆
বিড়াল জিনের সাথে থাকার নেগেটিভ এলার্জিগুলোকে শোষণ করতে পারে। যার ফলে বিড়াল ঘরে থাকলে যেখানে জিন আসার আশঙ্কা নেই।
∆∆∆
বিড়ালের শরীরে মহান আল্লাহতালা এমন একটি ব্যাকটেরিয়া দিয়েছেন যা কিনা আমাদের আশেপাশে থাকা সকল নেগেটিভ এলার্জিকে শোষণ করে নেয়।

বিড়াল পালার বৈজ্ঞানিক উপকারিতা গুলো

∆∆∆

বেশকিছু গবেষণায় দেখা গেছে, বিড়াল পুষলে মানসিক চাপ কমে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা বিড়াল পোষেন; তাদের হৃদরোগের ঝুঁকি অন্যদের থেকে ৩০ শতাংশ কম।

∆∆∆

বিড়ালের মিউ মিউ ডাক বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ধ্বনিগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি, যা শরীরের পেশী ও অস্থির প্রদাহ নিরাময়ে থেরাপির মতো কাজ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিড়াল ২০-১৪০ হার্জ শব্দ উৎপাদন করে। ফলে এটা অস্থিসন্ধি ও পেশীর চিকিৎসায় থেরাপি হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারে।

∆∆∆

বিজ্ঞানীদের গবেষণা বলছে, বিড়ালের উপস্থিতিতে ঘুম আরও ভালো হয়। মায়োক্লিনিক সেন্টার ফর স্লিপ মেডিসিনের পরামর্শ অনুযায়ী, ঘুমের সঙ্গী হিসেবে বিড়ালকে রাখতে পারেন।

∆∆∆

পশু  গবেষক জ্ঞানী ডাক্তারদের মত অনুসারে, যেসব পুরুষ বিড়াল পোষেন; নারীরা তাদের প্রতি বেশি আকৃষ্ট হয়।

∆∆∆

যখন কেউ বিড়ালের সঙ্গে সময় কাটায় , তখন তাদের দেহে প্রশান্তি ও আরামদায়ক রাসায়নিক পদার্থের নিঃসরণ বৃদ্ধি পায়। ফলে ব্যক্তির রাগ, উদ্বেগ ও মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে- এমনটিই দেখা গেছে গবেষণায়।

∆∆∆

 ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, এক বছরের নিচের যেসব শিশু বিড়ালের প্রেমে মগ্ন থাকে; তাদের বিভিন্ন ধরনের অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা কম।

∆∆∆

তাছাড়া আরও এক গবেষণা অনুসারে, কুকুরের তুলনায় বিড়াল অনেক কম খাবার খায় । তাছাড়া ঘর থেকে ইঁদুর তাড়ায় বিড়াল।

∆∆∆

যেসব ব্যক্তি বিড়াল পোষে তারা স্মার্ট হয়ে থাকেন। কারণ তারা অনেক ব্যস্ততার পরও বিড়ালের সেবা-যত্ন করেন। এভাবে তারা নিজের প্রতিও যত্নশীল হয়ে ওঠেন।

∆∆∆

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচলিত আছে, বিড়াল ঘরে থাকলে অশুভশক্তি বা আত্মা সেখানে প্রবেশ করতে পারে না। রাশিয়ার গ্রামাঞ্চলে এ বিশ্বাসটি এখনও প্রচলিত আছে।

∆∆∆

বিড়াল আপনার অবসর সময়ের খুব ভালো একজন বন্ধু ও সঙ্গী হতে পারে, যা আপনাকে আনন্দ ও প্রশান্তি এনে দেবে।

**প্রতি বছর আগস্টের ৮ তারিখ বিড়াল দিবস পালিত হয় বিশ্বব্যাপী। বিড়াল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং মানুষ ও বিড়ালের বন্ধুত্ব উদযাপনের লক্ষ্যে বিশেষ এ দিনটি পালিত হয়ে আসছে।২০০২ সালে ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার কর্তৃক এ বিড়াল  দিবসটি চালু করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল ক্যাট কেয়ার আন্তর্জাতিক বিড়াল দিবসের আনুষ্ঠানিক বিড়াল দিবস তৈরি করে  । 

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ