অনলাইন ইনকাম করতে চাইলে সেরা অনলাইন ইনকাম সাইট সম্পর্কে জানা আবশ্যক। অনলাইন জুড়ে বিভিন্ন কাজের জন্য সেরা সেরা অনলাইন ইনকাম করার সাইট রয়েছে। বর্তমানে অনলাইন ভিত্তিক সকল কাজের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। সেইসাথে অনলাইনে ইনকাম করার সাইট এবং উপায় দুটোই বৃদ্ধি পেয়েছে।পূর্বে দেশের নিজস্ব ইনকাম সাইট না থাকলেও এখন বাংলাদেশের বেশ কিছু অনলাইন ইনকাম সাইট রয়েছে তন্মধ্যে বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সিং সাইট এবং আর্টিকেল লিখে আয় করার সাইটগুলো অন্যতম।এই সময়ে যারা বেকার ঘরে অএও আছেন অথবা জবের সন্ধানে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তারা অযথা সময় নষ্ট না করে ভালো কোন অনলাইন ইনকাম করার ওয়েবসাইটে রেজিস্ট্রেশন করে আয় করতে পারেন।এখন ঘরে বসে কাজের জন্য অনেক ভালো ভালো অনলাইন ইনকাম করার সাইট রয়েছে। যেগুলোতে কাজ করার মাধ্যমে আপনি আপনার আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেন।তবে অনলাইনে ইনকাম করতে গিয়ে প্রতারনার স্বীকার হওয়াও স্বাভাবিক ঘটনা, তাই অনেকেই কাজ শুরু করতে ভয় পান। এক্ষেত্রে, প্রথম সতর্কতাস্বরূপ যেসব সাইটে ইনভেস্ট করতে হয়, তা এড়িয়ে চলতে বলবো।দ্বিতীয়ত, আপনার অনলাইন আয় করার সাইট খুঁজে বের করার পরিশ্রম কমাতে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে অনলাইন ইনকাম করার সেরা ১৫টি ওয়েবাসাইট এর সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো ইন-শা-আল্লাহ।বিশেষ করে যারা লেখাপড়ার পাশাপাশি কিছু করতে চাচ্ছেন, নিজের দক্ষতা বাড়াতে চাচ্ছেন, তারা নিশ্চিন্তে অনলাইনে টাকা ইনকাম করার এই সাইটগুলোতে কাজ করতে পারবেন।
নাম্বার 1: ক্রিয়েটিভ মার্কেট
Creative Market মূলত একটি ডিজিটাল প্রোডাক্ট মার্কেটপ্লেস। এখানে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন সফটওয়্যার যেমন;
*বিভিন্ন টেমপ্লেট
*ব্লগ বা ওয়েবসাইট থিম
*ফন্ট
*স্টক ফটো
*ফটোশপের বিভিন্ন সেট
*বিভিন্ন ধরনের গ্রাফিক্স ডিজাইন পাওয়া যায়
অনলাইন ইনকাম করার এই সাইটে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাস্টমাররা এই মার্কেটপ্লেসে আসেন। তাদের প্রোজেক্টের জন্য এই ধরনের অ্যাসেট গুলো তারা কিনে থাকেন। আপনিও এই ধরনের বিভিন্ন ডিজিটাল অ্যাসেট তৈরি করে মার্কেটপ্লেসে লিস্টিং করে সেল করতে পারেন।এটি দিয়ে আপনি বেসিক একটি আর্নিং সোর্স তৈরি করে নিতে পারবেন। একটি অ্যাসেট আপনি একবার তৈরি করবেন এবং এটি যতবারই সেল হবে আপনি সেখান থেকে ততোবারই আর্ন করতে পারবেন।ক্রিয়েটিভ মার্কেট সম্পর্কিত কোনো ডিজিটাল প্রোডাক্ট তৈরি করতে পারলে যদি আপনার দক্ষতা থেকে থাকে তাহলে, অনায়াসেই ক্রিয়েটিভ মার্কেট থেকে আপনি ভালো টাকা ইনকাম করতে পারবেন এবং আপনার ক্যারিয়ার ডেভেলপ করতে পারবেন।
নাম্বার 2: পিপল পার আওয়ার
এটি একটি সার্ভিস বেজ মার্কেটপ্লেস। এখানে আপনি যেকোন ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইড করার মাধ্যমে ভালোভাবে আপনার ক্যারিয়ার ডেভেলপ করতে পারবেন। যেমন:
*ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট
*ভিডিও এডিটিং
*কন্সালটিং
*এমএস ওয়ার্ড
*এক্সেল
*গ্রাফিক্স ডিজাইন
*কনটেন্ট রাইটিং ইত্যাদি এই মার্কেটপ্লেসে পাবেন।
এছাড়া, আরও বিভিন্ন ধরনের কাজ এই মার্কেটপ্লেসে পাওয়া যায়। ডিজিটাল উপায় ডেলিভার করা যায় এমন যেকোন কাজ এই ফ্রিল্যান্সিং সাইট এ করতে পারবেন।আপনি যদি মেন্যু থেকে জবস বাটন এ ক্লিক করেন তাহলে এখানে অনেক ধরনের জব পেয়ে যাবেন। সেখান থেকে ধারণা নিয়ে পছন্দের কাজ বাছাই করতে পারবেন।আপনি যদি ছাত্র হন এবং পড়াশুনার পাশাপাশি কিছু করতে চান তাহলে পিপল পার আওয়ার মার্কেটপ্লেস দিয়ে স্টুডেন্ট অবস্থায়ই অনলাইন ইনকাম শুরু করতে পারেন। বেসিক ধারণা নিয়েই এই অনলাইন ইনকাম করার সাইট থেকে ভালো এমাউন্ট আয় করতে পারবেন।
নাম্বার 3: থিমফরেস্ট
এই মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে আমরা হয়ত অনেকে জানি না, আবার অনেকে জেনে থাকতে পারেন। এটি একটি জনপ্রিয় ডিজিটাল প্রোডাক্ট মার্কেটপ্লেস।একটি ওয়েবসাইটের জন্য যত ধরনের সফটওয়্যার প্রয়োজন হয় তার সব ধরনের সফটওয়্যার এর থিমফরেস্ট এ পাওয়া যায়। পাশাপাশি,
*বিভিন্ন গ্রাফিক্স ডিজাইন
*মিউজিক ক্লিপস
*ভিডিও ক্লিপস
*স্টক ফটো ইত্যাদি এই ধরনের ডিজিটাল প্রোডাক্ট এখানে সেল হয়।
বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের টুলস ডেভেলপারগণ এই সাইটের মাধ্যমে ডিজিটাল অ্যাসেটগুলো সেল করছে।উল্লেখিত যেকোন ধরনের ডিজিটাল অ্যাসেট তৈরি করে সেল করার জন্য থিমফরেস্ট সবচেয়ে বিশ্বস্ত অনলাইন ইনকাম করার সাইট।
নাম্বার 4: Pond5
যারা ফটোগ্রাফী বা ভিডিওগ্রাফিতে ক্যারিয়ার গড়তে চায় তাদের জন্য Pond5 বেস্ট অণলাইন ইনকাম করর সাইট হতে পারে। এই মার্কেটপ্লেসটি ভিডিও ফুটেজ এবং স্টক ফটোর জন্য খুবই জনপ্রিয়। এখানে ডিজিটাল অ্যাসেটগুলো খুব ভালো দামে সেল হয়ে থাকে।যদি ফটোগ্রাফি বা ভিডিওগ্রাফিকে আপনার পেশা হিসেবে নিতে চান তাহলে এই মার্কেটপ্লেস এ কাজ করতে পারেন। এই Online Earning site এ আপনার ক্যাপচার করা ছবি বা ভিডিওগুলোকে ভালো দামে সেল করে আয় করতে পারবেন।
নাম্বার 5: ইউটিউব
বাংলাদেশে অনলাইন ইনকাম করার সাইট হিসেবে ইউটউবকে পরিচয় করানোর যদিও কিছু নেই। ইউটিউব বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্ম।এখানে একজন ইউজার খুব সহজেই ভিডিও দেখতে পারে এবং তার জানা বিভিন্ন বিষয়ের উপরে ভিডিও আপলোড করতে পারে। এই আপলোড করা ভিডিও ভিউজ থেকে গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ইনকাম করতে পারেন। এডসেন্স ছাড়াও, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং, বিজ্ঞাপন, স্পন্সরশীপ, প্রোডাক্ট প্রমোশন, কোর্স বিক্রি, প্রভৃতি উপায়ে ইউটিউব থেকে ভালো মানের ইনকাম করা সম্ভব।ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করার জন্য কোন এপ্রুভালের প্রয়োজন হয়না। যেকোন বিষয়ের উপরে ভিডিও তৈরি করে খুব সহজে সেটা ইউটিউবে আপলোড করা যায়।অনেকেই এখন ঘরে বসেই ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করে ভালো ইনকাম করছেন। আপনিও এই কাজে আগ্রহী থাকলে নির্দিষ্ট একটি বিষয়ের ওপর ভিডিও আপলোড করে আপনার ক্যারিয়ার ডেভলপ করতে পারেন।
নাম্বার 6: ফাইবার
ফাইবার হচ্ছে বর্তমান সময়ে অনলাইনে সবচেয়ে ট্রেন্ডিং মার্কেটপ্লেস। এই মার্কেটপ্লেসে যেকোনো ডিজিটাল সার্ভিস প্রোভাইড করার মাধ্যমে ক্যারিয়ার ডেভেলপ করতে পারবেন।বাংলাদেশ থেকে বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার এই মার্কেটপ্লেসে কাজ করছেন। ফাইবারে যেসব কাজ জনপ্রিয়:
*ওয়ার্ডপ্রেস
*ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট
*গ্রাফিক ডিজাইন
*ভিডিও এডিটিং
*এমএস ওয়ার্ড
*এক্সেল
*এসইও, ইত্যাদি বিষয়ের ওপর ফ্রিল্যান্সাররা কাজ করে অনলাইনে আয় করছেন।
বর্তমানে এই মার্কেটপ্লেসে আপনি হাজার হাজার ডলারের সার্ভিস সেল করতে পারবেন। একটা সময় এই মার্কেটপ্লেসে মাত্র পাঁচ ডলারের কাজ পাওয়া যেত যার কারণে এর নাম দেওয়া হয় ফাইবার।মেনু অপশন থেকে বিভিন্ন ক্যাটাগরি কিছুক্ষণ ভিজিট করলেই আপনি ধারণা পেয়ে যাবেন এই মার্কেটপ্লেসে কোন কোন বিষয়ের উপর কাজ পাওয়া যায়।তাই যেকোনো একটি বিষয়কে ফিক্সড করে FIVERR ফ্রিল্যান্সিং সাইটে কাজ শুরু করে দিতে পারেন।
নাম্বার 7: Ajkerdeal
আজকের ডিল বাংলাদেশের অনলাইন ইনকাম সাইট। আপনার তৈরি করা প্রোডাক্টগুলো আজকের ডিল সাইটের মাধ্যমে বিক্রি করে আয় করতে পারেন।
যদি আপনি ওয়েবসাইট মেইনটেন করা না বুঝেন, মার্কেটিং বিষয়ে খুব দুর্বল হন তাহলে, এই অনলাইন ইনকাম করার এই ই-কমার্স সাইটটি আপনার জন্য বেস্ট হবে।আজকের ডিল থেকে আয় করার জন্য আপনাকে একটি মার্চেন্ট একাউন্ট তৈরী করে নিতে হবে, যেটি সম্পূর্ন ফ্রি এবং এই একাউন্টের আন্ডারে আপনার প্রোডাক্টগুলো আপলোড করবেন।যখনই এই মার্কেটপ্লেস থেকে আপনার কোনো প্রোডাক্ট সেল হবে তখন মার্কেটপ্লেস ১০ পার্সেন্ট থেকে ১৫ পার্সেন্ট চার্জ কাটবে এবং বাকিটা আপনার একাউন্টে থাকবে।বর্তমানে আজকের ডিল বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করছে। প্রোডাক্টগুলো কাস্টমারদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কুরিয়ার সুবিধা দিচ্ছে।আপনি টেক বিষয়ক একজন দুর্বল লোক হলেও আজকের ডিল থেকে খুব সহজে আপনার প্রোডাক্ট গুলো সেল করতে পারবেন।
নাম্বার 8: 99 Design
99 Design ডিজাইনারদের জন্য বেস্ট অনলাইন ইনকাম করার সাইট বিশেষ করে, ব্রান্ডিং ডিজাইনারদের জন্য।প্রত্যেকটি কোম্পানির ব্র্যান্ড ডিজাইনের প্রয়োজন পড়ে যেমন, লোগো ডিজাইন। পুরো বিশ্ব থেকে বিভিন্ন কোম্পানী এই সাইটে এসে লোগো ডিজাইনের জন্য কনটেস্ট পাবলিশ করে থাকে।যে কনটেস্ট গুলোতে ডিজাইনাররা তাদের ডিজাইনগুলো সাবমিট করতে পারে। যে উইনার হয় সেই ডলারগুলো পেয়ে যায়।আপনি যদি একজন ভালো গ্রাফিক ডিজাইনার হয়ে থাকেন, তবে আপনার ক্যারিয়ার অপশন হিসেবে 99Design কে প্রাধান্য দিতে পারেন।
নাম্বার 9: bikroy.com
bikroy.com সম্পূর্ণ বাংলাদেশী প্রোডাক্ট এবং সার্ভিস বেজড মার্কেটপ্লেস। বিভিন্ন ধরনের নতুন পুরাতন প্রোডাক্ট কেনার জন্য এই মার্কেটপ্লেসে প্রচুর কাস্টমার নিয়মিত ভিজিট করে থাকেন।তাই এই মার্কেটপ্লেসকে ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই আপনার ক্যারিয়ার ডেভলপ করে ফেলতে পারেন। আপনার কাছে যদি কোন প্রোডাক্ট থাকে বা আপনি যদি কোন প্রোডাক্ট বেজড বিজনেস করতে চান তাহলে বিক্রয়.কম এ একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করে নিন। এই একাউন্টের মাধ্যমে আপনার তৈরি প্রোডাক্ট গুলো আপলোড করে সেল করতে পারবেন।আপওয়ার্ক, ফাইবার, পিপল পার আওয়ার যেমন ফ্রীল্যান্স মার্কেটপ্লেস (যেখানে চাইলে আপনি সার্ভিস প্রোভাইড করে ডলার ইনকাম করতে পারেন), bikroy.com ও সেই ধরনের একটি মার্কেটপ্লেস, এখানে আপনি সার্ভিস ও প্রোডাক্ট দুটোই সেল করতে পারবেন।
নাম্বার 10: Freelancer.com
ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেসগুলোর মাঝে সবচেয়ে পুরাতন এবং প্রসিদ্ধ। Freelancer.com সাইটে অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং সাইটের মতোই বিভিন্ন অনলাইন বেজড কাজ পাওয়া যায়। এই অনলাইন আয় করার সাইটে কাজের মূল্য অন্য যেকোনো ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট এর চেয়ে বেশি, তবে কাজ করার জন্য অভিজ্ঞতার লেভেল দূর্দান্ত হতে হবে। ফ্রিল্যান্সার ডট কমে যেসব কাজ পাওয়া যায়;
*কাস্টমার সাপোর্ট
*ভিডিও এডিটিং
*ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট
*কনটেন্ট রাইটিং
*কন্সাল্টিং
*এমএস ওয়ার্ড
*এক্সেল
*ভিডিও এডিটিং
*ছবি এডিটিং
*গ্রাফিক্স ডিজাইন
*ওয়েব ডেভেলপমেন্ট
*সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ইত্যাদি অনেক ধরনের কাজ এই মার্কেটপ্লেসে পাওয়া যায়।
এইখানে পাওয়া কাজগুলোর ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারলে ইউরোপ-আমেরিকার মতো উন্নত দেশগুলোর বিভিন্ন কোম্পানির পার্মানেন্ট ফ্রিল্যান্সার হওয়ার সুযোগ পাওয়া যায়, অর্থাৎ তারা বারবার আপনার কাছেই অর্ডার করবে কিংবা পার্সোনালি কন্টাক্ট করেও কাজ দিতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ