সারা দিনের ব্যস্ততায় ঠিকমতো খাওয়ার সময় পান না এমন অভিযোগ অনেকেরই। এতে শরীরে দৃশ্যমান ও অদৃশ্যমান নানা অসুখের আশঙ্কার পাশাপাশি তৈরি হচ্ছে ভুল খাদ্যাভ্যাস। সারা দিন না খেয়ে এরপর খাওয়ার সময় হয়তো খেয়ে ফেলছেন অনেক বেশি।তাই খুব কষ্ট করে একবার ওজন কমলেও সুনির্দিষ্ট খাদ্যাভ্যাস না থাকায় কিছুদিনের মধ্যেই বাড়তে শুরু করে ওজন। জমতে থাকে মেদ। অথচ একটু বুঝে খেলেই কমতে শুরু করবে পেটের এসব মেদ। আমাদের এবারের আয়োজন সেসব খাবার নিয়েই।
***গ্রিন টি: এতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসহ এমন কিছু পুষ্টির উপাদান, যা চর্বি কমাতে এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ক্যানসারেরও ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত গ্রিন টি পানে কমতে শুরু করবে ওজন।
***মরিচ: কাঁচা মরিচে আছে ক্যাপসেইসিন নামের একধরনের উপাদান, যা শরীরকে সুঠাম করতে কার্যকর। রান্না করা বা কাঁচা যেকোনো ধরনের মরিচের ঝাল মেটাবলিজম বাড়িয়ে দেয় এবং নিজে থেকেই ক্যালরি বার্ন করে। তাই একটু বেশি ঝালযুক্ত খাবার কমাতে পারে ওজন।
***সাগু দানা: যদি আপনি একেবারে নিরামিষভোজী হন তাহলে ওমেগা থ্রি নিয়ে একদমই ভাবতে হবে না। সাগু দানায় আছে ওমেগা থ্রি, যা ওজন কমাতে সহায়তা করবে। এতে আছে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, ক্যালসিয়াম, লোহা ও প্রচুর পরিমাণে ফাইবার।
***আদা-চা: আদা হজমে সাহায্য করে। সারা দিনের দৌড়ঝাঁপে আদা-চা যেমন প্রশান্তি দেবে, তেমন এটি দুশ্চিন্তাজনিত ওজন কমাতেও সাহায্য করবে।
***মাছের তেল: মাছের তেলে আছে ওমেগা থ্রি, যা ওজন কমাতে সহায়তা করবে। মাছের তেল হাড় গঠনে সহায়তা করে, স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে এবং প্রয়োজনীয় কোলস্টেরল বৃদ্ধি করে। মাছের তেল কোমর ও পেটের চর্বি কমাতে সহায়তা করে।
***লেবু-পানি: চিনি ছাড়া তৈরি লেবু-পানি শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে। লেবু-পানি লিভার পরিষ্কার রাখে, সে সঙ্গে বাড়িয়ে দেয় চর্বি ভাঙার কাজও।
***দারুচিনি: দারুচিনি মেটাবলিজম বাড়িয়ে শরীরের মেদ কমাতে সহায়তা করে। এ ছাড়া দারুচিনি শরীরে শর্করার মাত্রা কমিয়ে দেয়, যার ফলে এটি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়।
***লিন মিট: মাংস সেদ্ধ করে পানি ফেলে দিলেই তৈরি হয় লিন মিট। যাঁরা মাংস খেতে ভালোবাসেন, তাঁরা তেল-চর্বিযুক্ত মাংস না খেয়ে লিন মিট খেতে পারেন। সাধারণ মাংসের থেকে ৩০ শতাংশ ওজন কমবে শুধু লিন মিট খাওয়ার জন্যই।
***পানি: প্রচুর পানি পান করুন। পানি শরীরের নানা অসুখ থেকে আপনাকে নিরাপদ রাখবে। পানিস্বল্পতার কারণে মাথাব্যথা থেকে শুরু করে নানা অসুখ তৈরি হতে পারে। সেসব থেকেও মুক্তি মিলবে নিমেষেই।
ওজন কমে যাওয়ার পর অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস আর ভুল জীবনাচরণ আবার বাড়িয়ে দিতে পারে ওজন। সেটা একদিকে যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকারক, তেমন এতে তৈরি হতে পারে ওজনসংক্রান্ত হতাশাও।
পেটের মেদ কমাতে ৭ দিনের প্ল্যান!
‘মেদ ভুঁড়ি কি করি’ সমস্যায় অনেকেই ফেঁসে গিয়েছেন। আর সেই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অবলম্বন করছেন বিভিন্ন পদ্ধতি। মেদ ভুঁড়ি নিয়ে যারা মহা বিপদে আছেন তারা খুব সহজেই মুক্তি পেতে পারবেন এই সমস্যা থেকে। এমনকি মাত্র ৭ দিনেও বেশ কিছুটা কমানো সম্ভব পেটের মেদ। যেসব খাবার শরীরের মেদ বাড়ায় যেমন অ্যালকোহল, চিনি, প্রক্রিয়াজাত খাবার ইত্যাদি এড়িয়ে মাছ, মুরগী ও সবজি খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে। প্রক্রিয়াজাত খাবার ও চিনি শরীরকে মেদ বহুল করে তোলে এবং তলপেট, উরু, নিতম্বে মেদ জমে যায়। তাই খাবার গ্রহণের সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। আসুন জেনে নেয়া যাক ওজন কমানোর ডায়েট প্ল্যান।
১. ক্যাফেইন, চিনি, অ্যালকোহল ও প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। এসব খাবার শরীরে সহজেই মেদ জমিয়ে দেয়।
২. খাবার তালিকা থেকে নিজের প্রিয় খাবার গুলো বাদ না দিয়ে সপ্তাহে এক দিন খান। সপ্তাহে একদিন কেক কিংবা চকলেট খেলে পুরো সপ্তাহ ডায়েটের বিরক্তি ও একঘেয়েমি কেটে যাবে। সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে মেটাবলিজম।
৩. মেদ কমাতে মাছের তেল খান। মাছের তেল অতিরিক্ত মেদ ঝরিয়ে ফেলে এবং শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ফ্যাটি এসিড সরবরাহ করে।
৪.নিয়মিত সকালের নাস্তা করুন। ঘুম থেকে ওঠার ১ ঘন্টার মধ্যেই সকালের নাস্তা সেরে ফেলুন। যদি সকালে নাস্তা করার একেবারেই সময় না পান, তাহলেও কিছু ফল ও বাদাম অথবা একটি ডিম সেদ্ধ খেয়ে নিন।
৫. রাত ৮ টার পড়ে ভারী খাবার খাবেন না। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ৪ ঘন্টা আগে ভারী খাবার খেয়ে নেয়া ভালো। রাতে খেয়েই ঘুমিয়ে পড়লে হজমে সমস্যা হয় এবং মেদ বাড়ে।
0 মন্তব্যসমূহ