ওয়েবসাইট-বিল্ডিং টুল/CMS হিসাবে ওয়ার্ডপ্রেস এর জনপ্রিয়তা বিবেচনা করে আপনি ওয়ার্ডপ্রেস থেকে বিভিন্ন উপায়ে অর্থ উপার্জন করতে পারেন। সর্বোপরি, ওয়ার্ডপ্রেস হল ইন্টারনেটের সবচেয়ে বড় কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। এই কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আসার পরে, এখন মানুষ খুব সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করে সেখানে নিজেদের অনলাইন ব্যবসা পরিচালনা করতে পারেন।ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আমরা বিভিন্ন ধরনের বিজনেস, non-profit, ই-কমার্স ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারি এবং ক্লায়েন্টকে এই ধরনের ওয়েবসাইট তৈরী করে দিয়ে আমরা ইনকাম করতে পারি, নিজে ব্লগ লিখে ওয়ার্ডপ্রেস এর মাধ্যমে ব্লগিং করে ইনকাম করতে পারি, আমরা প্লাগিন বাথিং ডেভেলাপমেন্ট করে বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসে প্লাগিন বিক্রি করে ইনকাম করতে পারি, নিজে একটি ই-কমার্স বা ড্রপ শিপিং প্লাটফর্ম গড়ে তুলে সেখান থেকে ইনকাম করতে পারি, ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েব সাইটের সিকিউরিটি এবং ব্যাকআপ সার্ভিস দিয়ে ক্লায়েন্ট থেকে ইনকাম করতে পারি, ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েব সাইটে এসইও সার্ভিস প্রোভাইড করে লোকাল এবং ইন্টারন্যাশনাল থেকে ইনকাম করতে পারি। এছাড়া আমরা নিজেরা যা ওয়াডপ্রেস সম্পর্কে জানি তা অনলাইন বিভিন্ন স্কিল শেয়ারিং/ কোর্স প্লাটফর্মে আমাদের স্কিল সেল করে ইনকাম করতে পারি।আপনার ইচ্ছাশক্তি, মেধা,কাজ করার মন মানসিকতা থাকলে আপনিও ওয়ার্ডপ্রেস ক্যারিয়ার হিসেবে নিয়ে প্রচুর টাকা আয় করতে পারবেন।কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যারা জানেন না কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে টাকা আয় করা যায় বা ওয়ার্ডপ্রেস কি, কেন এটি সব থেকে বেশি জনপ্রিয়। আবার অনেকেই আছেন যারা নতুন ওয়ার্ডপ্রেস শিখছেন কিন্তু জানেননা কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস থেকে আয় করা যায়। পাশাপাশি অনেকেই ওয়ার্ডপ্রেস এ যথেষ্ট এক্সপার্ট হওয়া সত্ত্বেও সঠিক তথ্য বা আয়ের উপায় জানা না থাকায় ওয়ার্ডপ্রেস সম্পর্কিত কাজ খুজে পাননা এবং সে অনুযায়ী টাকা আয়ও করতে পারেনা।
ওয়ার্ডপ্রেস কি?
যাইহােক, ওয়ার্ডপ্রেস হলো ফ্রি এবং ওপেন সোর্স ব্লগিং টুল এবং PHP ও MySQL দ্বারা তৈরি করা একটি কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। এর ব্যবহার সহজ এবং User-Friendly হওয়ায় এর ব্যবহার এবং জনপ্রিয়তা সব চেয়ে বেশি। যেকেউ চাইলে এই সফটওয়্যার টিকে ব্যবহার করে যেকোনাে ধরনের ওয়েবসাইট বানিয়ে ফেলতে পারে। আ্যলেক্সা র ্যাংকিংয়ের ভিত্তিতে শীর্ষ এক লক্ষ ওয়েবসাইটের ১৬.৭% ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা গঠিত।ওয়ার্ডপ্রেসে যে বিল্টইন ফরম্যাট আছে, সেটি ব্যবহার করেই আপনি আপনার ওয়েবসাইট লাইভ করতে পারবেন। তবে যদি আপনার সাইটে কাস্টম ফ্রন্টএন্ড বানাতে চান, তাহলে আপনাকে কয়েকটা প্লাগইন ব্যবহার করতে হবে।ওয়ার্ডপ্রেসে প্লাগইন ব্যপারটা খুবই ইন্টারেস্টিং। আপনি এই প্লাগইন ব্যবহার করে আপনার ওয়েবসাইটে ফ্রন্টেন্ড কিংবা ব্যকএন্ড দুই জায়গাতেই ফিচার ইমপ্লিমেন্ট করতে পারবেন। মূলত এই প্লাগইনগুলো বিভিন্ন ডেভেলপার বানিয়েছেনই আপনার ওয়েবসাইটের ফাংশনালিটি বাড়িয়ে ওয়েবসাইটকে আরও ইন্টারেকটিভ করে তোলার জন্যে।নিচে ওয়ার্ডপ্রেস শিখে আয় করার বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। চলুন দেখে নেয়া যাক।
ব্লগ তৈরি ও তার থেকে আয় করা
অনলাইনে কাজ করতে হলে, নিজের একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে, তার থেকে আয় করা একটি সাধারন ব্যাপার। আপনি যদি অনলাইনে কাজ করে, তার থেকে ইনকাম করতে চান তাহলে, এখনি একটি ব্লগ খুলে ফেলুন। যদি এই বিষয়ে একদম নতুন হয়ে থাকেন তাহলে, ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখে নিতে পারেন বা গুগলে সার্চ দিয়ে দেখে নিতে পারেন কিভাবে ব্লগ ওপেন করা যায়।
আপনি আপনার ক্লায়েন্টদের ওয়ার্ডপ্রেস এর ব্লগ বা ওয়েবসাইট তৈরি করে টাকা ইনকাম করতে পারেন। সরাসরি ক্লায়েন্ট পেতে সমস্যা হলে আপনি ওডেক্স, ইল্যান্স, ফ্রিল্যান্সার সহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে চেষ্টা করতে পারেন। এভাবে ব্লগিং হতে উপার্জনের উপায় গুলো ভালো করে জেনে কাজ করলে আরো সহজে অনেক ইনকাম করতে পারবেন।আর এর জন্যে আপনাকে ইংরেজিতে পারদর্শী হতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আপনাকে শুধু লিখতে জানতে হবে, সেটা ইংরেজি কিংবা বাংলায় কন্টেন্ট লিখে আপনার ওয়েবসাইটে পাবলিশ করতে হবে।আপনি চাইলে বাংলায় কন্টেন্ট লিখেই হাজার হাজার টাকা আয় করতে পারেন। কারণ বাংলাদেশের শত শত মানুষ এখন এই কাজটি করছেন, এবং নিজেদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করে তুলছেন।
প্লাগিন/থিম ডেভলপমেন্ট
প্লাগইন ডেভেলপমেন্ট হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস ডেভলপারদের অন্যতম একটি কাজের জায়গা যেখানে আপনি নিজের দক্ষতা ফুটিয়ে তোলে। আমরা আগেই বলেছি প্লাগইন দিয়ে আপনি কি কি করতে পারবেন বা ওয়ার্ডপ্রেসে প্লাগইন আসলে কেন প্রয়োজন হয়। codecanyon মার্কেটপ্লেসে প্রচুর পরিমাণে প্লাগিন কেনাবেচা করা হয়, যেখানে আপনি একটি কাস্টম প্লাগিন তৈরি করে এবং সেল করে ইনকাম করতে পারেন।আর ওয়ার্ডপ্রেসের ওয়েবসাইট ডিজাইন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের প্রিভিউ টেমপ্লেট অথবা থিম মার্কেটপ্লেসে পাওয়া যায়। এই থিমগুলো ডিজাইন এবং ডেভেলপমেন্ট করে থিমফরেস্ট, টেমপ্লেট মনস্টার মার্কেটপ্লেসগুলোতে সেল করে প্রচুর পরিমাণে ইনকাম করা সম্ভব।যদি কোডিং এ এক্সপার্ট হয়ে থাকেন তাহলে আপনার কোডিং এর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে প্লাগইন এবং থিম তৈরি করে এবং তা বিক্রি করে টাকা আয় করতে পারেন। আপনার এই সকল ডেভেলপমেন্ট আপনি ওয়ার্ডপ্রেস, থিমফরেস্ট সহ বিভিন্ন ওয়েবসাইট বিক্রি করতে পারেন। এছাড়া আপনি আপনার ক্লাইন্টের চাহিদামত ডেভলপমেন্ট করে দিয়েও টাকা ইনকাম করতে পারেন।
ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট মেইন্টেনেন্স সার্ভিস সেল
ক্লায়েন্টের ওয়েবসাইটের কোন সমস্যা হলে সেই সমস্যার সমাধান করেও টাকা আয় করতে পারেন।এ ধরনের কাজ প্রায় সবসময়ই পাওয়া যায়। এজন্য আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং ওওয়েবসাইটে একটিভ থাকতে হবে।ওয়েবসাইটের মেইন্টেনেন্সের মধ্যে, টেকনিক্যাল প্রব্লেম খুঁজে বের করা ও সমাধান করা, স্পিড অপটিমাইজেশন করা, প্লাগইন এবং থিম আপডেটেড রাখা। থিমের কিংবা প্লাগইনের সেটিংস ঠিক রাখা। এছাড়াও বিভিন্ন জিনিস আছে যেগুলো প্রতিনিয়ত নজরে রাখতে হয়, তা না হলে যেকোন সময় ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে যেতে পারে।এই সকল ডিফিকাল্টিস, টেকনিক্যাল ইস্যুগুলো আপনার ক্লায়েন্টকে বুঝানোর মাধ্যমে তাদেরকে ওয়েবসাইট মেইন্টেনেন্সের গুরুত্ব বুঝাতে হবে। ফলে তারা তাদের নিজেদের স্বার্থেই তাদের ওয়েবসাইট মেইন্টেনেন্সের দায়িত্ব আপনাকে দিয়ে দিবে
0 মন্তব্যসমূহ