মধুমাস মানে রসে মাখামাখি করে আম খাওয়ার দিন। হিমসাগর, গোপালভোগ, ল্যাংড়া, খিরসাপাতি; নামেই যেন অর্ধেক প্রশান্তি। এরপরও যাদের গপাগপ আম খাওয়া চাই, তাদের জন্য একগাদা কারণ হাজির করেছেন বিশেষজ্ঞরা। হাজারো আম আমাদের প্রায় সকলেরই একটি পছন্দের ফল। আম খায়না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াটা খুব জটিল হয়ে যাবে বর্তমান যুগে। তবে আমরা অনেকেই হয়তো এই আম খাওয়ার উপকার সম্পর্কে জানি না। আবার অনেকে হয়তো জানি তবে আজ এই আর্টিকেলে ডিজিটাল বাংলা ৩৬০ এর মাধ্যমে আপনাদেরকে আমের সকল উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হবে। যদি আপনারা আমের উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান তাহলে অবশ্যই চোখ রাখুন পুরো রিভিউ জোরে।
ক্যান্সার যোদ্ধা
বর্তমান সময়ে ক্যান্সার একটি কমন রোগ হয়ে গেছে আমাদের বিশ্বে। তবে এই আম খেলেও ক্যান্সার দূর হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন তার কারণ হলো আমের ভিতরে রয়েছে কোয়েরসেটিন, ফাইসেটিন, আইসোকোয়েরসেটিন, অ্যাস্ট্রাগ্যালিন, গ্যালিক অ্যাসিড ও মিথাইল গ্যালেট নামের কঠিন নামওয়ালা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো আছে আমে। স্তন ক্যান্সার থেকে শুরু করে কোলন ক্যান্সার, প্রোস্টেট ক্যান্সার ও লিউকেমিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে এগুলো বেশ কাজের। তাই আপনারা যদি ক্যান্সার হতে দূরে থাকতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত আম খেতে পারেন।
কোলেস্টেরল ঠিকঠাক
উচ্চমাত্রার ভিটামিন সি, ফাইবার ও প্যাকটিন থাকায় রক্তে উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ভূমিকা রাখে রসালো আম।
ত্বকের জন্য
ত্বককে ভেতর থেকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে আম। বিশেষ করে ত্বকের ফুসকুড়ি দূর করে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এটি। তাই আমি বলব আপনার ত্বক কে মসৃণ রাখতে আম খেতে পারেন।
অ্যালকালাইন লেভেল
আমে আছে টারটারিক অ্যাসিড ও ম্যালিক অ্যাসিড। আছে সাইট্রিক অ্যাসিডও। শরীরের অ্যালকালি নামের রাসায়নিকের ভারসাম্য ঠিক রাখে এটি।
ওজন কমাতে
আমে এতো এতো ভিটামিন আছে যে একটা আম খেলেই কিন্ত শরীরে রোজকার ভিটামিনের চাহিদা মিটে যাওয়ার কথা। আবার এতে ফাইবারও যোগাবে পুষ্টি ও শক্তি। তাই এই মৌসুমে যারা ওজন কমানোর কথা ভাবছেন তারা বার্গার, কোল্ড ড্রিংকস বা সাব-স্যান্ডউইচের বিকল্প খাবার হিসেবে বেছে নিন আম।
লাভ ফ্রুট
ইংরেজিতে কঠিন একটা শব্দ আছে- আফ্রোডিজিয়াক। এর বাংলা হতে পারে এমন, যাহা খাইলে মনে ভালোবাসার উদ্রেক হয়। আম কিন্তু এমনই একটা ফল। সুতরাং মৌসুম থাকতেই প্রিয়জনকে বেশি বেশি আম উপহার দিন।
চোখের জন্য
এটা তো ছোটবেলা থেকেই পড়ে এসেছেন। আমের ভিটামিন এ আমাদের রাতকানা থেকে বাঁচাবে। যদিও এ রোগ এখন নেই বললেই চলে তবে চোখের স্বাস্থ্যের জন্য বেশি বেশি আম খেলে ক্ষতি নেই। বিশেষ করে ড্রাই আই সমস্যায় যারা ভুগছেন তারা আম খেয়ে উপকার পেতে পারেন।
হজমের জন্য
স্বাস্থ্য যদি সুখের মূলে থাকে, তবে স্বাস্থ্যের মূলে আছে হজম। আমে থাকা এনজাইমগুলো প্রোটিন উপাদানগুলোকে সহজে ভেঙে ফেলতে পারে। এতে খাবার হজম হয় দ্রুত, বাঁচা যায় পাকস্থলী সংক্রান্ত অনেক রোগ থেকেও।
হিট স্ট্রোক ঠেকাবে
এই গরমের হিট স্ট্রোক সাধারণ ঘটনা। আম আমাদের ভেতরটা শীতল রাখে ও শরীরকে অতিরিক্ত গরম হয়ে যাওয়া থেকে শরীরের ভেতরের অঙ্গগুলোকে বাঁচায়।
রোগ-প্রতিরোধ
এই করোনাকালে আমে থাকা ক্যারোটেনয়েড বাড়িয়ে দেবে আপনার রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা। সহযোদ্ধা হিসেবে ভিটামিন সি তো আছেই।
মনযোগ ও স্মৃতির জন্য
কোনও কিছুর প্রতি মনযোগ ধরে রাখতে কষ্ট হলে উপকার করবে আম। মেমোরি বুস্টার হিসেবেও কাজ করে ফলটি।
বডি স্ক্রাব
ত্বককেও খাওয়াতে পারেন আমের নির্যাস। বডি স্ক্রাব হিসেবে পাকা আম বেশ ভালো কাজ করে। পেস্ট তৈরি করে তাকে একটুখানি মধু আর দুধ মিশিয়ে নিন। আলতো করে মাসাজ করে ১০-১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
কতোটা খাবেন?
এতো এতো উপকারের কথা শুনে গপাগপ গিলতে যাবেন না। এক কাপ আমে আছে ১০০ ক্যালোরি। আর এর ৯০ ভাগই আসে আমে থাকা চিনি থেকে। সুতরাং ডায়াবেটিস রোগীরা আম খাওয়ার আগে পুষ্টিবিদের দেওয়া চার্টটা দেখে নিন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দিনে একটি পাকা আমের অর্ধেকটা খাওয়ারই পরামর্শ দেওয়া হয়।
0 মন্তব্যসমূহ