আপেল এর উপকারিতা সম্পর্কে বুঝাতে একটি কথা খুব প্রচলিত, “প্রতিদিন একটি করে আপেল খেলে ডাক্তারদের থেকে অনেক দূরে থাকতে পারবেন”। সুতরাং, আপেল এর উপকারিতা কতটা বেশি তা বেশ ভালোভাবেই অনুমাণ করা যায়। আপেলের এত এত উপকfরিতা রয়েছে যে, চিকিৎসকগণ আমাদের নিয়মিত একটি আপেল ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন।আপেল সকলের কাছেই পরিচিত এবং অধিকাংশ মানুষের প্রিয় ফলের তালিকায় জায়গা নিয়ে আছে। স্বাদ এবং রঙের দিক থেকেও অতুলনীয়, যার কারণে ছোটরাও আপেল খেতে বেশ পছন্দ করে। তবে আপেল শুধু একটি ফল-ই নয়, আপেল এর উপকারিতা ও পুষ্টিগুণের কারণে একে প্রাকৃতিক ঔষধও বলা যেতে পারে।সবুজ বা লাল আপেল দুটোই স্বাস্থ্য উপকারিতা ও পুষ্টিগুণে ভরপুর। অবশ্য, বেশিরভাগ মানুষই এটি শুধুমাত্র একটি সুস্বাদু ফল হিসেবেই খেয়ে থাকেন, আপেল খেলে কি উপকার হয় তথা, আপেলের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানেন না। তাই, আজ আমরা আপেলের উপকারিতা সমূহ সম্পর্কে জানবো ইন-শা-আল্লাহ।
আপেল এর উপকারিতা সমূহ
আপেল এর উপকারিতা ও পুষ্টিগুণের সংখ্যা অনেক বেশি। এটিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইটো-নিউট্রিয়েন্টস পাওয়া যায়। এছাড়াও আপেলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ও ভিটামিন সি পাওয়া যায়। এছাড়াও মিনারেল, ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও কপার রয়েছে। যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।এখন আসুন জেনে নেয়া যাক, আপেলের কি কি উপকারিতা রয়েছে যা আমরা খুব সহজেই পেতে পারি।
১। আপেল দাঁতকে মজবুত এবং সাদা করে
আপেল খেলে দাঁতের অনেক উপকার সহ দাঁত ঝকঝকে হয়। কারণ আমরা যখন আপেল চিবোতে থাকি তখন আমাদের মুখের ভেতর এক ধরনের নালার সৃষ্টি হয়। এর ফলে দাঁতের কোনা থেকে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে আসে। যার কারণে এই খারাপ ব্যাকটেরিয়া দাঁতের কোন ক্ষতি করতে পারে না।আপেলে থাকা ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি দাঁতের মাড়ির জন্য অত্যন্ত উপকারী। আপেল খাওয়ার সময় যে রস আমাদের দাঁতের লাগে সেই রস দাঁতকে পরিষ্কার এবং সাদা করতে সাহায্য করে।
২। আপেল ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে
ক্যান্সার প্রতিরোধে আপেল এর উপকারিতা অতুলনীয়। আপেলের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফ্লাভোনল নামক উপাদান রয়েছে, যা অগ্নাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর ক্যান্সার রিসার্চ এর এক গবেষণায় জানানো হয়েছে যে, যারা নিয়মিত আপেল খান তাদের অগ্ন্যাশয়ে ক্যানসারের সম্ভাবনা প্রায় ২৩ শতাংশ হারে কমে যায়।আরও এক গবেষণায় আপেলের মধ্যে এমন কিছু উপাদান পাওয়া গেছে যা Triterpenoids নামে পরিচিত। এই উপাদানটি কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে এবং স্তন ও লিভার এর মধ্যে ক্যানসারের কোষ বেড়ে উঠতে বাধা প্রদান করে। এছাড়াও আপেলের মধ্যে থাকা ফাইবার মলাশয়ের ক্যান্সার রোধ করে।
৩। আপেল ডায়াবেটিসের সমস্যা কমায়
যে সকল মানুষ প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে আপেল খান তাদের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা ২৮ শতাংশ কমে যায়। কারণ আপেলে থাকা ফাইবার রক্তে শর্করার পরিমাণ ঠিক রাখে এবং শরীরে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। আপেলে থাকা polyphenols উপাদানটি শরীরে ইনসুলিন উপাদানকে উৎপাদনে সহায়ক ভূমিকা রাখে।বর্তমানে ডায়াবেটিস মহামারী আকার ধারণ করেছে। এই রোগের উত্তরণের পথ খুবই কম। তাই প্রতিদিন আপেল খেলে অল্প হলেও এই রোগকে দূরে রাখতে সহায়ক হতে পারে।
৪। নিয়েমিত আপেল খেলে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে থাকে
আপেলের মধ্যে থাকা ফাইবার ও অন্ত্রের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে। ফলে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক থাকে এবং খারাপ কোলেস্টেরল কমাতে শুরু করে। এর সাথে ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।নিয়মিত আপেল খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা ২৩ শতাংশ পর্যন্ত কম করতে সাহায্য করে। আর খারাপ কোলেস্টেরল কম হতে শুরু করলে হার্টের ক্ষতির সম্ভাবনা অনেকাংশে কমে যায়।
৫। আপেল হৃদরাগের ঝুঁকি কমায়
আগেই বলা হয়েছে যে আপনার মধ্যে থাকা ফাইবার কোলেস্টেরল কম করে। এছাড়াও আপেলের খোসায় থাকা ফেনোলিক উপাদানটি রক্তনালী থেকে কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। যার ফলে হার্টে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে পারে। এর কারণে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসে। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে আমাদের হার্টকে সুরক্ষিত রাখে।
0 মন্তব্যসমূহ