কোন একটি জমির মালিক আপনি নাকি অন্য কেউ সেটা বের করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের সমন্বয় কেই বলা হয় খতিয়ান। যা থেকে আপনি খুব সহজে নির্ধারণ করতে পারবেন যে কোনো একটি জমির আসল মালিক কে। আর আজকের আর্টিকেলে আমি খতিয়ান বের করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।হ্যালো বন্ধুরা স্বাগতম আপনাকে Wikipedia Bangla এর নতুন একটি আর্টিকেলে। আমরা প্রতিনিয়ত আপনাদের কে নিত্যনতুন অজানা বিষয় গুলোকে জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। আর সেই ধারাবাহিকতায় আজকে আমরা খতিয়ান বের করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করবো।আর যদি আপনার মধ্যে খতিয়ান সম্পর্কিত কোনো অজানা বিষয় থাকে। তাহলে আজকের পুরো আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়বেন। তাহলে কথা দিচ্ছি আজকের পর থেকে আপনার মনের খতিয়ান সম্পর্কিত কোন বিষয় অজানা থাকবে না। তো চলুন এবার তাহলে খতিয়ান বের করার নিয়ম 2023 গুলো সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
জমির খতিয়ান কি?
যারা মূলত ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে লেখাপড়া করেন তাদের কাছে “খতিয়ান”- শব্দটির অর্থ হল জাবেদা থেকে বিভিন্ন হিসাবসমূহের শ্রেণীবিন্যাস করা।কিন্তু আজকে আমি যে খতিয়ান নিয়ে কথা বলব তা একেবারেই ভিন্ন। কেননা এই খতিয়ান মূলত বিভিন্ন জমি জমার হিসেবে নির্দেশ করে থাকে।সহজ ভাষায় বলতে গেলে কোন একটি জমির স্বত্বতা প্রকাশের নিমিত্তে যেসব ডকুমেন্টস বা তথ্য সম্বলিত প্রয়োজনীয় কাগজ পত্রের সমন্বয়ক কে বলা হয়ে থাকে খতিয়ান। মূলত এই খতিয়ানের মাধ্যমে কোন একটি জমির আসল মালিক কে, তা নির্ধারণ করা যায়। কেননা খতিয়ান এর সাথে সম্পর্কযুক্ত কাগজপত্র গুলোতে জমির মালিকানা সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করা থাকে।যেমন, কোন একটি নির্দিষ্ট জমির দুই বা ততোধিক মালিক এর নাম, পিতার নাম, জমির মালিকের স্থায়ী ঠিকানা, জমির দাগ নম্বর এবং উক্ত জমির পরিমাণ কতটুকু। আর এইসব তথ্য গুলোর মাধ্যমে মূলত কোন জমির মালিক কে তা খুব সহজেই শনাক্ত করা যায়। আর জমির মালিক শনাক্তকরণে যেসব কাগজপত্র প্রয়োজন হয় সেই সবগুলো কাগজপত্রের সমন্বয়ক বলা হয় খতিয়ান।
খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি?
খতিয়ান বের করার নিয়ম জানার আগে আপনাকে আরো কিছু বিষয়ে ধারণা রাখতে হবে। সেটি হল খতিয়ান কত প্রকার ও কি কি। কেননা বর্তমান সময়ে আপনি মোট চার (৪) প্রকারের খতিয়ান দেখতে পারবেন। যথাঃ
০১| সি.এস খতিয়ান (CS Khatian): আপনি হয়তো বা জেনে থাকবেন যে 1940 সালে ব্রিটিশ শাসনামল ছিল। আর এই ব্রিটিশ শাসনামলে যেসব খতিয়ান তৈরি করা হয়েছিলো, সবগুলোকেই বলা হয়ে থাকে সি এস খতিয়ান (CS Khatian). বলা বাহুল্য যে এটি ছিলো বাংলার আমলের সর্বপ্রথম জমির খতিয়ান। যা ব্রিটিশ সরকারের হাত ধরে তৈরি করা হয়েছিলো।
০২| এস.এ খতিয়ান (SA Khatian): ব্রিটিশ শাসনামল সমাপ্ত হওয়ার পরে পাকিস্তানের আমলে আরও একটি নতুন খতিয়ান তৈরি করা হয়। আর সেই খতিয়ান কে বলা হয় এস এ খতিয়ান(SA Khatian). ধারনা মতে 1956 সাল থেকে শুরু করে হাজার 1960 সালের মধ্যে এই ধরনের এস এ খতিয়ান তৈরি করা হয়েছিলো।
০৩| আর.এস খতিয়ান (RS Khatian): ব্রিটিশ শাসন আমলের খতিয়ান এবং পাকিস্তান শাসনামলের খতিয়ান গুলোতে বিশেষ কিছু ভুল ত্রুটি ছিলো। সেই কারণেই বাংলাদেশ সরকার পুনরায় সেই ভুল ত্রুটি থাকা খতিয়ান গুলোর সংশোধন করার জন্য আরো নতুন এক ধরনের খতিয়ান তৈরি করে। যাকে বলা হয় আর এস খতিয়ান (RS Khatian).
০৪| বি.এস খতিয়ান (BS Khatian): বর্তমানে চলমান সময় অবধি যেসব খতিয়ান তৈরি করা হচ্ছে সেগুলো কে বলা হয় বি এস খতিয়ান (BS Khatian). আর এই ধরনের খতিয়ান গুলোর কার্যক্রম বর্তমান সময় অবধি চলমান রয়েছে।
জমির খতিয়ান এর প্রয়োজনীয়তা কি?
আমরা সবাই জানি যে জমি হল আমাদের সবার জন্য অমুল্য সম্পদ। আর আমাদের মধ্যে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন জমি কিনে থাকেন। আবার এমনও হতে পারে যে বিভিন্ন প্রয়োজনে আপনাকেও কোনো না কোনো সময়ে জমি কেনার দরকার হতে পারে। আর ঠিক এই সময়েই খতিয়ান বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।তবে প্রশ্ন এখানে থেকেই যাচ্ছে যে খতিয়ান কেন আমাদের দরকার হয়? খতিয়ান এর প্রয়োজনীয়তা কি?- তো চলুন এবার তাহলে সে সম্পর্কে স্বল্প আকারে আলোচনা করা যাক। তাহলে পরবর্তী আলোচনা গুলো আপনার বুঝতে সুবিধা হবে।দেখুন যখন আপনি কোন স্থানের জমি কিনবেন তখন অবশ্যই আপনাকে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কেননা আপনি যদি সাবধানতা অবলম্বন না করেন তাহলে আপনাকে পড়তে হবে প্রতারকদের হাতে। আর প্রতারকদের প্রতারণা থেকে রেহাই পেতে খতিয়ান বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।কারণ খতিয়ান হল এমন কিছু কাগজপত্রের সমন্বয় যে কাগজপত্রগুলো সঠিকভাবে পর্যালোচনা করে কোন একটি জমির আসল মালিক কে, তা খুব সহজেই নির্ধারণ করা যায়। আর সে কারণেই কোনো জমি ক্রয় বিক্রয় করার সময় খতিয়ানকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাই এটা বলা যায় যে কোন জমির স্বস্ততা নির্নয়ে খতিয়ান এর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
0 মন্তব্যসমূহ