সবার আগে জানিয়ে রাখি ফ্লিপকার্টের মাধ্যমে আপনি কেবল বিক্রয় করেই অর্থোপার্জন করতে পারবেন তা নয়, এই কোম্পানি থেকে অ্যাফিলিয়েট করার সময় কিংবা অন্যান্য সিচুয়েশনেও কেনাকাটার কাজটিও সেরে ফেলতে পারবেন সহজেই। এটি একটি ই-বাণিজ্য সম্প্রসারণ ভারতীয় সংস্থা৷ যা থেকে আপনি পৃথিবীর যেকোনো স্থানে বসেই ইনকাম জেনারেট করতে পারবেন। সেই সাথে ফ্লিপকার্টের অনুমোদিত প্রোগ্রামের মাধ্যমে অনলাইনে অর্থোপার্জন করতে চাইলে খুব একটা জটিল প্রসেসের মুখোমুখিও হতে হবে না আপনাকে।জনপ্রিয় সংস্থা হলো এই ফ্লিপকার্ট। যা সাধারণত আমাজনের মতোই ভারত এবং পুরো বিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। প্রতিদিন কয়েক হাজার অর্ডার সরবরাহ ঠিকঠাকমতো পরিচালনা করতে এই কোম্পানির রয়েছে অসংখ্য কর্মকর্তা ও কর্মচারী। শচীন বানসাল এবং বিন্নি বানসালের হাত ধরে যাত্রা শুরু করা এই কোম্পানিটির বই বিক্রি শুরু হয়েছিল যা ২০০৭ সালের অক্টোবরের দিকে। ভারতের বৃহত্তম ই-বাণিজ্য ওয়েবসাইট স্বীকৃতি পেয়েছে এই ফ্লিপকার্ট অনলাইন শপিং ওয়েবসাইটটি। অ্যামাজন সংস্থাকে শক্ত প্রতিযোগিতা দিতে মোটামুটি বেশ ভালো কাজ করছে এই ওয়েবসাইটটি। বর্তমানে আমেরিকান খুচরা সংস্থা ওয়ালমার্টের কাছে হস্তান্তর বা সেল করা হয়েছে এই ফ্লিপকার্ট। তারা মূলত ৭৭% শেয়ার কিনে নিয়েছে।
ফ্লিপকার্ট কিভাবে কাজ করে?
ফ্লিপকার্ট সাধারণত অনলাইনে প্রোডাক্ট সেলিংয়ের কাজ করে থাকে। প্রথমে বই দিয়ে অনলাইন বিজনেস শুরু করলেও পরবর্তীতে তারা ল্যাপটপ ব্যাগ, ট্যাবলেট, ইউএসবি ড্রাইভ বিক্রিও শুরু করে। সবশেষে তারা ডিসিশন নেই প্রতিটি বিভাগের জন্যই পণ্য বিক্রির ব্যবস্থা করবে এবং করছেও তাই।সমস্ত বিক্রেতার সাথে সম্পর্ক তৈরি করে তারা তাদের প্রতিটি প্রোডাক্ট গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়। বলে রাখা ভালো ফ্লিপকার্টের নিজস্ব লজিস্টিক সার্ভিস রয়েছে। যার নাম ইকার্ট। অনলাইন বিজনেসের গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো গ্রাহককে সময়মতো ডেলিভারি দিতে সক্ষম কিনা বা সেইসাথে তাদের কাছ থেকে পেমেন্ট কালেক্ট করার মিডিয়া কি! এক্ষেত্রে ফ্লিপকার্ট হলো সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে গ্রাহকেরা আনন্দের সাথে ঘরে বসে কেনাকাটা করার সুযোগ পায়।
ফ্লিপকার্ট থেকে কিভাবে শপিং করবেন?
ফ্লিপকার্ট থেকে শপিং করতে চাইলে আপনাকে সরাসরি চলে যেতে হবে তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। ওয়েবসাইট ঠিকানা হলো www.flipcart.com। চলুন এবার জেনে নিই কিভাবে ধাপে ধাপে এই ওয়েবসাইট থেকে কোনো প্রোডাক্ট অর্ডার করা যায় এবং তার পেমেন্ট করা যায়।
স্টেপ ০১
সবার আগে আপনাকে সাইটে প্রবেশ করে প্রয়োজনীয় ক্যাটাগরি সিলেক্ট করে নিতে হবে। অথবা আপনি চাইলে আপনার প্রয়োজনীয় পণ্যটি সার্চ করে দেখতে পারেন। এখানে আপনি একটা মানুষের জীবনের জন্য দরকারি প্রায় সবধরনের পণ্যই পেয়ে যাবেন।
স্টেপ ০২
এবার পছন্দের পণ্যটিতে ক্লিক করে তা ওপেন করে নিন। “Order Now” অপশনে ক্লিক করুন। চাইলে পরবর্তীতে প্রোডাক্ট কেনার জন্যে আপনি আপনার কার্টেও পণ্য এড করে নিতে পারেন।
স্টেপ ০৩
এবার আপনাকে অর্ডার প্লেস করতে হবে। এটি করতে হলে আপনাকে “Place Order” অপশনে ক্লিক করতে হবে। তবে তার আগে নিশ্চিত হতে হবে আপনি আপনার ফ্লিপকার্ট ওয়েবসাইটে লগইন আছেন কিনা! আর যারা এখনো একাউন্ট ক্রিয়েট করেননি তারা অবশ্যই একটি একাউন্ট খুলে ফেলবেন। কেননা এটি ইনকাম জেনারেট এবং প্রোডাক্ট বায়িং দুটো কাজেই লাগবে।
স্টেপ ০৪
অর্ডার প্লেস করলে আপনার ম্যাসেজ বক্সে কিংবা মেইল বক্সে একটি পিনকোড পাঠানো হবে। এবার আপনাকে আপনার পিন কোড সহ সম্পূর্ণ ঠিকানা অর্থ্যাৎ যেখানে আপনার প্রোডাক্ট পাঠানো হবে সেই ঠিকানা ঠিকঠাকমতো বসাতে হবে। নেক্সট অপশনে ক্লিক করে নিন।
স্টেপ ০৫
এটি হলো সবার শেষ ধাপ। যেখানে আপনাকে পেমেন্ট পে করতে হবে। আপনি চাইলে বিভিন্ন মিডিয়ার সাহায্য নিয়ে পেমেন্ট পে করতে পারেন। এক্ষেত্রে ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, নেট ব্যাঙ্কিংসহ নিজের পছন্দ মোড সিলেক্ট করে ইজিলি পে করে ফেলতে পারবেন।
ফ্লিপকার্ট থেকে কিভাবে ইনকাম করবেন?
ফ্লিপাকার্ট থেকে আপনি অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করে ইজিলি মাসে ৫০,০০০/- থেকে শুরু করে ৮০,০০০/- পর্যন্ত ইনকাম জেনারেট করার সুযোগ পাবেন। চলুন জেনে নিই ফ্লিপকার্ট থেকে অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে কিভাবে ইনকাম করবেন সে-সম্পর্কে।
ওয়েবসাইট তৈরি করে
আমরা সকলেই আমাজন অ্যাফিলিয়েট ওয়েবসাইট সম্পর্কে জানি। ফ্লিপকার্টের প্রোডাক্ট সেলিংয়ের জন্যেও আপনি সেইম প্রসেসে ওয়েবসাইটকে কাজে লাগাতে পারেন। তবে ফ্লিপকার্টের সুবিধা হলো এতে সাইট এপ্রুভের কোনো ঝামেলা নেই। তবে আপনি যদি আমাজনের প্রোডাক্টও একই সাইটে সেল করতে চান তাহলে আমাজনে সাইট এপ্রুভ না পাওয়া পর্যন্ত ফ্লিপকার্টের লিংক কোনোভাবেই বসানোর চেষ্টা করবেন না। এতে করে হয়তো আমাজন আপনার সাইট এপ্রুভ নাও করতে পারে।আপনার ওয়েবসাইটের জন্য একটি নিশ রিলেটেড ডোমেইন সিলেক্ট করা কিন্তু সবচেয়ে জরুরি। এটি আপনাকে অতিরিক্ত পরিমাণ সেল এনে দিতে সাহায্য করবে বলে আমি মনে করি। এর আপনাকে Hostgator এবং Bigrohosting কোম্পানির মতো জনপ্রিয় কোম্পানি থেকে একটি হোস্টিং সার্ভিস নিতে হবে। এসইও করে সাইটের লিংকগুলিকে অডিয়েন্সের কাছে পৌঁছাতে হবে। সেখান থেকে যদি কেউ আপনার লিংকে ক্লিক করে এবং কোনো প্রোডাক্ট কিনে ফেলে তাহলে আপনি সেই সেলের উপর একটি কমিশন পাবেন।
আরো পড়ুন: Chat GPT থেকে টাকা ইনকাম করার জন্য এখানে ক্লিক করুন
সোশ্যাল মিডিয়া থেকে
ফ্লিপকার্টের প্রোডাক্ট সেল করতে আপনি সোশ্যাল মিডিয়ারও সাহায্য নিতে পারেন। যাদের ফেইসবুক পেইজে হিউজ পরিমাণে অডিয়েন্স আছে তারা অন্যান্য বিষয়গুলি প্রমোট করার মতো করে ফ্লিপকার্টের প্রোডাক্টও প্রমোট করতে পারেন। আর যাদের অধিক পরিমাণে অডিয়েন্স নেই এবং সাইট তৈরি করার মতো মূলধনও নেই তারা পেইজ বুষ্ট করেও সেল জেনারেট করতে পারেন। এক্ষেত্রে খুবই অল্প পরিমাণের অর্থ ব্যয় হবে।
ইউটিউব থেকে
যারা ইউটিউবিং করেন তারাও ফ্লিপকার্টের প্রোডাক্ট প্রমোশন করে ইনকাম জেনারেট করতে পারেন। এক্ষেত্রে ইউটিউবে থাকা আপনার অডিয়েন্সরাই হবে আপনার বায়ার। তারা আপনার লিংকে ক্লিক করে প্রোডাক্ট কিনলেই আপনি পাবেন কমিশন। এক্ষেত্রে ইউটিউব চ্যানেলে চেষ্টা করবেন বিভিন্ন প্রোডাক্টের রিভিউ টাইপের ভিডিও তৈরি করে তা পাবলিশ করতে।
শেষ কথা,
তো কেমন লাগলো আমাদের আজকের এই ফ্লিপকার্ট থেকে কিভাবে ইনকাম করবেন সে-সম্পর্কে লিখিত রিসার্চবহুল আর্টিকেলটি? আশা করি ভালো লেগেছে! এমন আরো ইনকাম টিপস টাইপের আর্টিকেল পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আশা করি টেক রিলেটেড বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিতে সক্ষম হবো আমরা।
0 মন্তব্যসমূহ