বরইর গুন ও পুষ্টি
বড়ই এর বিশেষ গুনাগুন রয়েছে যা আমাদের শরীর সুস্থ ও সবল রাখতে অনেক সাহায্য করে। ওষুধী গুনাগুন যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের অসুখ থেকে মুক্ত পাওয়া যায। আমাদের উচিত শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য অন্যান্য খাবার খাওয়ার পাশাপাশি খাদ্য তালিকায় বরই রাখা।এতে করে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে তোলা যাবে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।বরই খাওয়ার উপকারিতা দিকগুলো তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক। বরইয়ে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি রয়েছে তা আমাদের শরীরের ভিটামিনের অভাব পূরণ করতে সাহায্য করে। যারা প্রতিদিন ১০০ গ্রাম বড়ই খেলো তারা ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে পারল ৭৭ শতাংশ। তাই যারা নিয়মিত বরই খেতে পারবে তারা ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করতে পারবে।
বরই ফলের উপকারিতা
বরই ফলের বেশ উপকারিতা রয়েছে এর গুনাগুন সম্পর্কে আমরা উপরে আলোচনা করেছি। বরই খাওয়া আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। স্বাস্থ্য রক্ষার্থে বরইয়ের ভূমিকা রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক বরই ফলের কিছু উপকারিতা দিকগুলো যা আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন। আপনি যে খাবার খাচ্ছেন সে খাবার দ্বারা উপকার হচ্ছে কিনা তা জেনে রাখা উচিত।
হজম শক্তি বৃদ্ধি করে–
যারা নিয়মিত বরই খেতে পারলো তারা হজম শক্তি বৃদ্ধি করতে পারলো। যাদের হজম শক্তি খুবই দুর্বল তাদের ক্ষেত্রে বড়ই অনেক উপকারী। বরই খাবার পরিপাকে সহায়ক এনজাইমের উপস্থিতি রয়েছে। এর ফলে খুব সহজেই হজম শক্তি বৃদ্ধি হয়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় –
শরীর সুস্থ ও শবল রাখার জন্য অবশ্যই সুস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া প্রয়োজন এর মধ্যে বরই একটি। বরই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি র্যাডিকেলগুলোকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। এছাড়াও এর মধ্যে ভিটামিন সি, এ, বি২, ফাইটোকেমিক্যাল ইত্যাদি পাওয়া যায়। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
হাড় মজবুত করে–
হাড়ের গঠন মজবুত রাখার জন্য ক্যালসিয়াম এর প্রয়োজন। বয়সের সাথে সাথে দেখা যায় হাড়ের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হয়। তবে বরই হাড় মজবুত রাখার জন্য অনেকটাই কার্যকারী। এই ফলে রয়েছে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, আয়রন, আরো অনেক ভিটামিন সাথে মিনারেল। যা হাড়কে মজবুত ও শক্ত করতে সাহায্য করে।
অনিদ্রা থেকে মুক্তি–
অনিদ্রা থেকে মুক্তি রাখে অনেকটাই বরই। বরই খেলে ইনসোমনিয়া এবং অনিদ্রা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এর মধ্যে থাকা শক্তিশালী ক্যামিক্যাল ব্রেইনকে শান্তি প্রদান করে, যার ফলে ভালো ঘুম হয়।
লিভারের সুরক্ষায়–
শরীরের ফ্রি র্যাডিকেলগুলো লিভারের ক্ষতি করে। লিভার সুরক্ষা করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা বরই এর মধ্যে রয়েছে। নিয়মিত বরই খেতে পারলে লিভারের সুরক্ষা বৃদ্ধি করা যায়। বরই এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারকে সুরক্ষা প্রদান করে।
রক্ত পরিশুদ্ধি–
বরই মৌসুম অনুযায়ী শেষ হয়। তবে শুকনো করে অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়। রক্ত পরিশুদ্ধি রাখার জন্য শুকনো বরই খাওয়া উচিত। শুকনো বরই এর মধ্যে স্যাপোনিন, অ্যাল্কালয়েড এবং ট্রাইটারপেনয়েড উপাদান থাকে যারা রক্ত পরিশুদ্ধ করে এবং হজম প্রক্রিয়ায় সহায়তা করে।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে–
ক্যান্সারের প্রভাব কমানোর ক্ষেত্রে বরই এর উপকারিতা আছে। বরইয়ে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান। যা টিউমারের উপর সাইটোটক্সিক প্রভাব বিস্তার করে। যার ফলে শরীরে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়–
হৃদরোগের সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে বরইয়ের কার্যকারিতা অনেক। শরীরের প্রদাহ কমানোর জন্য প্রয়োজন ফাইটোকেমিকেল যা বড়ই রয়েছে। এর ফলে হৃদ রোগের ঝুকি কমে যায়। এবং বরই হার্ট এর অন্যান্য অসুখ হওয়ার থেকেও আমাদের রক্ষা করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখে-
বরই ক্যালরির মাত্রা অনেক কম এর পাশাপাশি ফ্যাট এর মাত্রা নাই বললেই চলে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য অনেকেই বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া বন্ধ করে। তবে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য বড়ইয়ের ভূমিকা রয়েছে। বরইয়ে ক্যালরির মাত্রা কম থাকার ফলে ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে।
রক্ত সঞ্চালন–
শরীরের রক্ত সঞ্চালন রাখা প্রয়োজন। যারা নিয়মিত বরই খেতে পারবে তারা রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পারবে। আয়রন ও ফসফরাস শরীরে রক্ত উৎপাদন এবং রক্ত সঞ্চালনের প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে।
0 মন্তব্যসমূহ