Join Our Telegram channel! name='keywords'/> ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ করার জন্য অসাধারণ পাঁচটি ট্রিক্স | Simple way to prevent diabetes

Ticker

10/recent/ticker-posts

Ads

ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ করার জন্য অসাধারণ পাঁচটি ট্রিক্স | Simple way to prevent diabetes

জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (নিপোর্ট)-এর একটি জরিপে দেখা গেছে, বাংলাদেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা এক কোটি ১০ লাখ। এদের মধ্যে ১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা ২৬ লাখ আর ৩৫ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ৮৪ লাখ।এমন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে ডায়াবেটিস সমিতির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর দিনটিকে ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস হিসাবে পালন করছে এই খাতের স্বাস্থ্য কর্মীরা।১৯৫৬ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এই সমিতি। বর্তমানে এই সমিতির হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোয় নিবন্ধিত রয়েছেন ৪৫ লাখের বেশি ডায়াবেটিস কর্মী।স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, ২০৪৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দাঁড়াবে দেড় কোটিতে।


ডায়াবেটিস রোগ প্রতিরোধ করার জন্য অসাধারণ পাঁচটি ট্রিক্স | Simple way to prevent diabetes


কী করলে ঠেকানো যায় ডায়াবেটিস রোগ

বাংলাদেশের ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ড. এ কে আজাদ খান বলছেন, ''ডায়াবেটিস প্রধানত টাইপ-ওয়ান ও টাইপ-২, এই দুইভাবে আমরা ভাগ করি। আমাদের দেশে ৯৫ শতাংশ রোগী টাইপ-২ ধরনের।''''টাইপ-ওয়ান হচ্ছে যাদের শরীরে একেবারেই ইনসুলিন তৈরি হয় না। তাদের ইনসুলিন বা পুরোপুরি ওষুধের ওপর নির্ভর করতে হয়। সেজন্য সবসময় চিকিৎসকের পরামর্শে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।''''তবে টাইপ-২ ধরনের ক্ষেত্রে আগাম সতর্কতা অবলম্বন করে রাখলে ৭০ শতাংশ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস ঠেকিয়ে রাখা বা বিলম্বিত করা সম্ভব।''এজন্য তিনি বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।

১. প্রতিদিন এক ঘণ্টা হাঁটুন

জীবনে আমাদের শারীরিক পরিশ্রম এবং হাঁটার প্রবণতা অনেক কমে গেছে। কম্পিউটার বা মোবাইলে কাজ করতে আমরা অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। কিন্তু যাদের পিতা-মাতা বা পরিবারের সদস্যদের ডায়াবেটিস আছে, তাদের জেনেটিক্যালি ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। ফলে তারা যদি আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই নিয়মিত হাঁটাচলা ও শারীরিক পরিশ্রম করতে শুরু করেন, তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারবেন।এজন্য প্রতিদিন নিয়ম করে অন্তত একঘণ্টা হাঁটতে হবে। পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। খেলাধুলা বাড়ানো যেতে পারে।

২. জীবনধারা পাল্টে দিন

যাদের পরিবার বা বাবা-মায়ের ডায়াবেটিস হওয়ার ইতিহাস রয়েছে, তাদের এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আগেই জীবনযাপনের ধরন পাল্টানো উচিত।
যেসব পরিবারের বাবা-মা বা দাদা-দাদী, নানা-নানীর ডায়াবেটিস হয়ে থাকে, তাদের পরবর্তী প্রজন্মের সদস্যদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।যাদের হৃদরোগ রয়েছে, রক্তে কোলেস্টেরল বেশি, উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে, তাদেরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।যেসব শিশুর ওজন বেশি, যাদের বাবা-মা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী, নানা-নানী বা ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনের ডায়াবেটিস রয়েছে, যাদের মায়ের গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হয়েছিল, সেই সব শিশুর ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।ফলে তাদের উচিত আক্রান্ত হওয়ার আগে থেকেই জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা।এই পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত সময়ে খাবার খাওয়া, নিয়ম মেনে সকালে ঘুম থেকে ওঠা এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়া, যানবাহন ব্যবহার কমিয়ে হাঁটাচলা বাড়ানো, মিষ্টি জাতীয়, ফাস্টফুড ও তৈলাক্ত খাবার পরিহার করা ইত্যাদি।

৩. ধূমপান ও মদ্যপান ছেড়ে দিন

শুধুমাত্র ডায়াবেটিস নয়, আরও অনেক রোগের কারণ হতে পারে ধূমপান ও মদ পানের অভ্যাস।চিকিৎসকরা বলছেন, ডায়াবেটিস রোগ ঠেকাতে যেসব খারাপ অভ্যাস সবার আগে বাদ দিতে হবে, তার মধ্যে রয়েছে ধূমপান ও মদ্যপানের অভ্যাস। কারণ এগুলো ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দেয়।

৪. মিষ্টি পরিহার করুন

বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি ড. এ কে আজাদ খান বলছেন, স্থূলতা বা অতিরিক্ত মুটিয়ে যাওয়ার কারণেও ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।সাধারণ মিষ্টিজাতীয় খাবার, ফাস্টফুড, কোমল পানীয়, ভারী খাবার স্থূলতার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীরের ওজনের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে, যাতে কোনভাবেই অতিরিক্ত ওজন বা মুটিয়ে যাওয়া না হয়।বিশেষজ্ঞরা এজন্য মিষ্টি, ফাস্টফুড, পোলাও, বিরিয়ানি, রেড মিটের মতো ভারী খাবার এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন।প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হবে। মসৃন শাদা আটার রুটির পরিবর্তে খেতে হবে ভুষিওয়ালা আটার রুটি। এটাই প্রথম ধাপ।এড়িয়ে চলতে হবে হোয়াইট পাস্তা, প্যাস্ট্রি, ফিজি ড্রিংক, চিনি জাতীয় পানীয়, মিষ্টি ইত্যাদি।আর স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে রয়েছে শাক সবজি, ফল, বিন্স এবং মোটা দানার খাদ্য শস্য।স্বাস্থ্যকর তেল, বাদাম খাওয়াও ভালো। ওমেগা থ্রি তেল আছে যেসব মাছে সেগুলো বেশি খেতে হবে। যেমন সারডিন, স্যামন এবং ম্যাকেরেল।এক বেলা পেট ভরে না খেয়ে পরিমাণে অল্প অল্প করে বিরতি দিয়ে খাওয়া দরকার।এছাড়া প্রতি সপ্তাহেই নিয়মিত ওজন মাপতে হবে। শরীরের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি ও খাবার নিশ্চিত করার জন্য পুষ্টিবিদের সঙ্গে পরামর্শ করে খাবারের তালিকা তৈরি করে সেটা অনুসরণ করা উচিত।ফলে একদিকে যেমন স্বাস্থ্য ঠিক থাকবে, তেমনি ওজনও নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

৫. রক্তে চিনির মাত্রার ওপর নজর রাখুন

বাংলাদেশের ডায়াবেটিক সমিতির মহাসচিব মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন বলছেন, যাদের ঝুঁকি রয়েছে, তাদের অবশ্যই বছরে একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করাতে হবে।এজন্য সবসময় হাসপাতালে যেতে হবে এমন নয়। এখন অনেক ফার্মেসিতে স্বল্পমূল্যে দ্রুত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করা যায়। সেখান ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।যাদের শিশুর ঘনিষ্ঠ স্বজনদের ডায়াবেটিসের ইতিহাস রয়েছে, তাদেরকেও বছরে অন্তত একবার করে পরীক্ষা করাতে হবে।সেই সঙ্গে বছরে অন্তত একবার লিপিড প্রোফাইল ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও পরীক্ষা করে দেখতে হবে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ