প্রাকৃতিক উপায়ে ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় অনেকে খোজেন। বর্তমান সময়ে ক্যান্সার একটি মহামারির মত ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা সবাই বিশ্বাস করি ক্যান্সার হলে আর রক্ষা নেই। অনেকে আখ্যায়িত করি ক্যান্সার মরনব্যাধি। এক সময় বিভিন্ন ক্যান্সার গবেষকগণ বলতেন যে ক্যান্সার হল বংশগত মরনব্যাধি। যা DNA দ্বারা মানুষের শরীরে ছড়ায়। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে বিভিন্ন গবেষণায় এটা ভুল প্রমাণিত হচ্ছে। এমন অনেক মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন যাদের পরিবারে কেউ ক্যান্সারে আক্রন্ত হয়নি পূর্বে। তবে হাইহোক এটা এখন মহামারি আকারে ধারন করেছে। যারা ক্যান্সার রোগে একবার আক্রান্ত হয়েছেন তাদের জীবন দূর্বিসহ প্রায় হয়ে যায়। প্রাকৃতিক উপায়ে ক্যান্সার থেকে মুক্তি কিভাবে পেতে পারে একজন ক্যান্সার রোগী এ বিষয়ে আমরা অনেকে বিস্তারিত জানতে চায়। অনেকে বিভিন্ন ডাক্তার, কবিরাজের নিকট শরাপন্ন হয়ে থাকেন। আর এই পথে অনেক অর্থ খরচ করেও তেমন কোন ফল না পেয়ে হতাশায় ভুগতে থাকে এবং আরো বেশি রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ে।
ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার কারন কি?
আমাদের শরীর বিভিন্ন কারনে এসিডিক হয়ে যায় ধীরে ধীরে। এছাড়াও আমাদের শরীরে টক্সিন তৈরী হচ্ছে এতে আমাদের শরীরে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। আমাদের শরীরে বায়ু, বাতাস, খাবার, পানির মাধ্যেম প্রচুর পরিমানে আমাদের শরীরে টক্সিন প্রবেশ করে। এবং এখানে সবচেয়ে বেশি পরিমানে ক্ষতিকরে ভাইরাস। বিভিন্ন ধরনে ক্ষতিকর ভাইরাস আমাদের শরীরে প্রবেশ করে।এমন ধরনের ক্ষতিকর ভাইরাস আমাদের শরীরে দীর্ঘদিন ঘুমন্ত অবস্থায় থাকে। এক সময় ধীরে ধীরে আমাদের শরীরে ক্যান্সারে রূপান্তর হয়। এখানে সবচেয়ে বড় গুরুত্বপূর্ন হল আমরা কি ধরনের খাবার খাচ্ছি, কেমন লাইফস্টাইল পরিচালনা করছি এর উপর নির্ভর করে।স্ট্রেস বা দুঃচিন্তা আমাদের শরীরে প্রচুর পরিমানে এসিডিক করে। আমাদের সমাজে ও পরিবারে অনেক মানুষ আছে যারা অনেক বেশি দুঃচিন্তা করে নিজেদের ঘুম নষ্ট করে, এমন মানুষের সাস্থ্যকর ঘুম নেই। অনেকের মধ্যে শত্রুতা, কারোর মাঝে প্রিয়জন হারানোর ব্যাথা বেদনা ইত্যাদি কারনে শরীরে এসিডিক হয়ে যায়।
অনেকে সবসময় গালিগালাজ একে অপরে নিজেকে সময় একটি বিপর্যায়ের মধ্যে রাখে এভাবে আমাদের শরীর এসিডিক হয়ে যায়, তাই এই অবস্থায় শরীর ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এভাবে অনেকে শরীরে ক্যান্সার তৈরী হয়।শরীর এসিডিক হলে আমাদের শরীরের স্বাস্থ্যকর PH অস্বাস্থ্যকর হয়ে গিয়ে ক্যান্সারের দিকে ধাবিত হয় ধীরে ধীরে। ক্যান্সার শরীর বেঁচে থাকে এসিডিক ৪র্থ ধাপে। গবেষনায় এসেছে আমাদের শরীরে স্বাস্থ্যকর যে কোষ রয়েছে তাঁর মেটাবলিজম অক্সিজেন ব্যবহার করে এবং তাঁর খাবার হচ্ছে অন্যটি।এবং আমাদের শরীরে স্বাস্থ্যকর কোষ শক্তি উৎপাদন করার জন্য প্রধান জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে শরীরের উপকারি চর্বি বা ফ্যাট। অপর দিকে আমাদের শরীরে যখন জরুরী শক্তি প্রয়োজন তখন কার্বোহাইড্রেট মেটাবলিজম হিসেবে ব্যবহার করে।অন্যদিকে ক্যান্সার চর্বি বা ফ্যাট থেকে আমাদের শরীরে শক্তি তৈরী করেনা। ক্যান্সারের একমাত্র খাবার হচ্ছে গ্লুকোজ। আর এই গ্লুকোজ মেটাবলিজমে প্রচুর পরিমানে ল্যাক্টিক এসিড তৈরী হয়। অর্থাৎ গ্লুকোজ অক্সিজেন ব্যবহার করবে না বরং সরাসরি ল্যাক্টিক এসিডে প্রবেশ করে এসিডিক পরিবেশ তৈরী করে।অর্থাৎ আমাদের শরীরে ক্যান্সার কোষ বেঁচে থাকতে হবে তাকে দুইটি উপাদানের মাধ্যমে বেঁচে থাকতে হবে। ১ম হল তাঁর পরিবেশ হতে হবে এসিডিক এবং ২য় হল ঐস্থানে কোন ধরনের অক্সিজেন থাকতে পারবে না। অর্থাৎ ক্যান্সার বেঁচে থাকার মুল কারন হল এসিডিক পরিবেশ। তাহলে আমরা বুঝলাম ক্যান্সারের মুল কারন হল টক্সিন আর এই টক্সিন আমাদের শরীরকে এসিডিক করে তোলে এবং তখন প্রচুর পরিমানে প্রিয়েডিকেল তৈরী করে আমাদের শরীরে ধীরে ধীরে ক্যান্সার তৈরী হয়।
ক্যান্সার বর্তমান সময়ে মহামারি আকার ধারন করেছে একমাত্র কারন হল টক্সিন। এবং টক্সিন থেকে এসিডিক। আমাদের শরীর এসিডিক হওয়ার আরো কারন রয়েছে। এর মধ্যে খাবার আরো একটি বড় কারন। আমরা প্রতিনিয়ত প্রচুর পরিমানে অস্বাস্থ্যকর কৃত্রিম খাবার খেয়ে থাকি যা আমাদের শরীরে টক্সিনের পরিমান বৃদ্ধি করে এবং ধীরে ধীরে ক্যান্সারের দিক নিয়ে যায়।
ক্যান্সার কয় প্রকার?
আমাদের সমাজে এবং পরিবারে অনেক ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে আমরা শুনে থাকি তিনি কি ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন। ক্যান্সার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। সাধারনত ক্যান্সার দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। ১। হরমন নির্ভর ক্যান্সার। ২। হরমন ছাড়াই ক্যান্সার।
হরমন নির্ভর ক্যান্সার
হরমন নির্ভর ক্যান্সার বলতে বোঝায় হরমনের কারনে বা হরমন সমস্যার কারনে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। বিশেষ করে প্রোস্টেড ক্যান্সার, ব্রেস্ট ক্যান্সার, ওভারি, ইউটেরাস বা জরায়ু ক্যান্সার সহ ইত্যাদি। এই সকল ক্যান্সার গুলো হরমন জনিত কারনে হয়ে থাকে।
হরমন ছাড়াই ক্যান্সার
কিছু ক্যান্সার হয়ে থাকে যেগুলো হরমন কোন ভাবেই দ্বায়ী নয়। বিশেষ করে লাঞ্চ ক্যান্সার, পাকস্থলী ক্যান্সার, ক্লোন ক্যান্সার, প্যানক্রিয়াটিক ক্যান্সার ইত্যাদি। এই ধরনের ক্যান্সার গুল হরমন ছাড়াই হয়ে থাকে।
ক্যান্সার হওয়ার ধাপ কয়টি?
কিছু রোগ আছে যেগুলোর ধাপ রয়েছে আমরা শুনে থাকি যে কিডনি রোগের বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। তেমনি ক্যান্সার রোগের বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। ক্যান্সারের ৪ টি ধাপ রয়েছে। ৪র্থ ধাপে ক্যান্সার মানে সারা শরীরে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে। তখন ডাক্তার বলেন যে আর সম্ভব না। তখন আর বেশি দিন সময় থাকেনা।
ক্যান্সার যখন আমাদের শরীরে বাস করে তখন আমরা যতদ্রুত সম্ভব আমাদের চিকিৎসা গ্রহন করতে হবে। ৪র্থ ধাপে না যাওয়ার পূর্বেই চিকিৎসা গ্রহন করা উচিৎ। যদিও এমন রেকর্ড আছে যে ৪র্থ ধাপ ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়েছে। আল্লাহ তায়ালার রহমতে কোন কোন ক্যান্সারের রোগী সুস্থ হয়েছেন।ক্যান্সারের ৩য় ধাপ পর্যন্ত আপনি ক্যান্সার থেকে অনায়াসে সুস্থ হতে পারবেন। প্রাকৃতিক উপায়ে ক্যান্সার থেকে মুক্তি হলে যারা ক্যান্সারের ১ম থেকে ৩য় ধাপের মধ্যে আছেন তাদের উচিৎ নিয়ম মেনে চলা। আমরা এখানে পরিপূর্ণ ভাবে তুলে ধরব এখানে।তবে যদি ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাহলে আমাদের উচিৎ ৪র্থ ধাপের পূর্বের আগেই বিভিন্ন মেডিকেল টেস্ট দ্বারা পরিক্ষা করাতে হবে। যেহেতু ক্যান্সার মাল্টি ফ্যাক্টারল অর্থাৎ বেশকিছু কারনে ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাই আমাদের অনেক গুলো দিক খেয়াল রাখতে হবে।
প্রাকৃতিক উপায়ে ক্যান্সার থেকে মুক্তি’র উপায়
যদি ক্যান্সার থেকে সুস্থ হতে চায় তাহলে আমাদের শরীর থেকে অবশ্যই ক্যান্সার রিমুভ করতে হবে আমাদের শরীর থেকে। ক্যান্সার শরীর থেকে রিমুভ করার জন্য Insulin potentiation therapy অনেক বেশি ভূমিকা পালন করে। এটি একটি ফলপ্রসু পদ্ধতি যেটির মাধ্যমে খুব সহজেই ক্যান্সার থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। এটিকে IPT বলা হয়ে থাকে। তবে ক্যান্সার রিমুভ করার জন্য সবচেয়ে কার্যকারী হল হিমু থেরাপি।এই পদ্ধতিতে আমাদের শরীরের সুস্থ কোষগুলো নষ্ট হয়না। তাই এই পদ্ধতি ব্যবহার করা খুব জরুরী। বর্তমান সময়ে ডাক্তারের কাছে গেলে কোন ডাক্তার IPT এর জন্য পরামর্শ দেন না। ক্যান্সারের চিকিৎসা বর্তমান সময়ে ব্যবসায়ে পরিনত হয়েছে।একই ভাবে আমাদের হার্ট জনিত রোগ বা হার্ট ব্লকের জন্য যদি NGO গ্রাম করতে গেলে অবশ্যই ডাক্তার সার্জারির জন্য পরামর্শ দেয়। বাইপাস অথবা রিং বা ওপেন হার্ট সার্জারি করতে বলবে ডাক্তার।প্রাকৃতিক উপায়ে ক্যান্সার থেকে মুক্ত পেতে আমাদের এই ধরনের চিকিৎসা গ্রহন করতে হবে যা আমাদের শারীরিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে। IPT পদ্ধতিতে মাত্র ১০% ঔষধ ব্যবহার করে ক্যান্সারের চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। তাই এখানে বিভিন্ন চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায়িক লাভ হয়না। তাই অনেক ক্ষেত্রে IPT পদ্ধতি জানা থাকলেও তাঁরা পরামর্শ দেন না।
প্রাকৃতিক উপায়ে ক্যান্সার থেকে মুক্তি মিলবে আমরা যদি সঠিক পন্থা অবলম্বন করতে পারি। তাই সর্বদা আমাদের সঠিক চিকিৎসা গ্রহন করতে হবে এবং সঠিক চিকিসা উপায় জানতে হবে।আমরা হয়ত অনেকে জানি যে, ক্যান্সার কোষের মুল খাবার হল গ্লুকোজ। ক্যান্সার আক্রান্ত শরীরে যখন গ্লুকোজ পৌছায় তখন ক্যান্সারের কোষ গুলো অনেক খুশি হয়। অপর দিকে ক্যান্সার কোষ এলকাইনে বাঁচতে পারেনা। তাই ক্যান্সার রোগীর শরীরের PH দুই সপ্তাহের জন্য ৮.৫ রাখতে হবে। এই PH এ এই দুই সপ্তাহে ক্যান্সার থাকতে পারেনা।এই পর্যায়ে দুই সপ্তাহে পি. এইচ. পরিমাপ করতে হবে।প্রাকৃতিক উপায়ে ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়ার পদ্ধতি গুলোর মধ্যে একটি উপায় নিয়ে আমরা আলোচনা করছি। আগেই উল্লেখ করেছি যে ক্যান্সার কোষের খাবার হল গ্লুকোজ। তাই অর্গানিক Blackstrap Molasses এবং বেকিং সোডা প্রয়োজন হবে ক্যান্সার কোষকে নষ্ট করতে হলে। অনেকে মনে করতে পারেন Blackstrap Molasses এ গ্লুকোজ আছে। কিন্তু আসলে এটা রিফাইন্ড সুগার না।Blackstrap Molasses হল অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর পুষ্টি সমৃদ্ধ, Blackstrap Molasses উপকারিতা রয়েছে অনেক। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে আয়রন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগ্যানিজ, পটাশিয়াম ইত্যাদি বিদ্যমান রয়েছে। এটা কোন ভাবেই সুগার না। এই প্রচুর পরিমানে আয়রন রয়েছে যাতে ক্যান্সার আক্রান্ত শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বাড়াতে সাহায্য করে।যখন ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমান বৃদ্ধি করতে সাহায্য করতে তখন ক্যান্সার আক্রান্ত শরীরে অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি পাবে। Blackstrap Molasses এই ক্যান্সার কোষকে নষ্ট করতে সাহায্য করে, এটি ক্যান্সার কোষের খাবার নয়। এটি ক্যান্সার কোষের মারার খাবার।এই অবস্থায় ক্যান্সার কোষে অক্সিজেনের পরিমান বৃদ্ধি করে তাই ক্যান্সার কোষ নষ্ট করে খুব সহজেই। অর্থাৎ যদি ক্যান্সার রোগী Insulin Protection Therapy বা IPT পদ্ধতি ব্যবহার না করতে পারে তাহলে Blackstrap Molasses সাথে বেকিং সোড ব্যবহার করতে পারেন প্রাকৃতিক উপায়ে ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে।
শেষকথা,
বর্তমান সময়ে ক্যান্সার মরন ব্যাধি বলে আমরা অনেকে জানি এবং আখ্যায়িত করে থাকি। কিন্তু ক্যান্সার থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব যদি সঠিক ভাবে সঠিক পদ্ধিত অনুসরন করে চিকিৎসা গ্রহন করা হয়। এই ক্যান্সার রোগ থেকে বাঁচতে হলে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহন প্রয়োজন এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে সঠিক চিকিৎসা অতীব জরুরী।
0 মন্তব্যসমূহ