সারা বিশ্বে প্রথম পেয়ারা পাওয়া যায় মেক্সিকোতে যেটি মধ্য আমেরিকায় অবস্থিত এবং পরবর্তীকালে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। সব থেকে বেশি পরিমাণ পেয়ারা উৎপন্ন হয় ভারতবর্ষে তারপর চীন, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া এবং পাকিস্তানে।পেয়ারা বিভিন্ন প্রজাতির হয় কিছু পেয়ারা একটু বেশি দামি এবং কিছু পেয়ারা তুলনামূলক কম দাম, তবে প্রতিটি প্রজাতির পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা আমাদের শরীরের জন্য প্রায় সমান বা এদের পুষ্টিগত গুনাগুন কাছাকাছি।বিভিন্ন প্রজাতির পেয়ারা কে আমরা তার আকার এবং রং দিয়ে প্রকারভেদ করে থাকি। কিছু পেয়ারার রং উপরটা হলদে সবুজ হলেও ভেতরটা লাল বা গোলাপি রং এর হয় আবার কিছু পেয়ারার ভেতরের অংশটা সাদা হয়। আকারেরও অনেক পার্থক্য আছে কিছু পেয়ারার আকার খুব বড় আর কিছু পেয়ারা খুব ছোট।পেয়ারা এমন একটি ফল যা খুব সহজে বাজারে বা মার্কেটে পাওয়া যায় স্বল্প মূল্যে এবং আমরা কমবেশি সবাই পেয়ারা খেয়ে থাকি, কিন্তু আমাদের পেয়ারার উপকারিতা জানা আছে কি? তাই আজ আমাদের আলোচ্য বিষয় পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে।
পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা
*প্রতিদিন পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা আমাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ তার কারণ পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন C থাকে যা আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করতে বা রোগের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে তাই নিয়মিত পেয়ারা খেলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি সিস্টেম বৃদ্ধি পায়।
*পেয়ারাতে থাকে ফাইবার এবং গ্লাইসেমিক ইনডেক্স যা আমাদের রক্তে সুগারের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণে রাখে যার ফলে আমাদের রক্তে সুগারের পরিমাণ খুব বেশি বা কম হয় না। তাই নিয়মিত পেয়ারা খেলে আমাদের ব্লাড সুগার হওয়ার প্রবণতা কমে যায়।
*রক্তচাপ বা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পটাশিয়াম এবং সোডিয়াম এর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। যদি আমাদের শরীরে রক্ত চাপ এবং ব্যাড কোলেস্টেরল বাড়তে থাকে তাহলে আমাদের হৃদয় ঘটিত নানান রোগ দেখা দেয় তাই নিয়মিত পেয়ারা খেলে আমাদের রক্তে পটাশিয়াম এবং সোডিয়ামের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ব্যাড কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমে গিয়ে গুড কোলেস্টেরল বাড়তে থাকে ফলে আমাদের হৃদয় সংক্রান্ত রোগ কম হয়।
*পেয়ারাতে খুব বেশি পরিমাণ ফাইবার থাকে এবং এই ফাইবার আমাদের খাদ্য পচনে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণ করে তাই নিয়মিত পেয়ারা গ্রহণ করলে বা খেলে আমাদের হজম ক্ষমতা বা ডাইজেস্টিভ সিস্টেম বৃদ্ধি পায় এবং আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য বা কস্টিপেশনের অসুবিধা হয় না।
*আমাদের ত্বকে নানান ধরনের সমস্যা হতে পারে যেরকম কোন ব্যাকটেরিয়াল বা ফাংগাল ঘটিত রোগ বা ত্বকের উপর অনেক মৃত কোষের কারণে কালো দাগ বা চিহ্ন। কিন্তু নিয়মিত পেয়ারা খেলে ওই জাতীয় সমস্যা আমাদের হয় না তার কারণ পেয়ারাতে কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে যেরকম ক্যারোটিনি, লিউকোপিনি এবং থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন A আর ভিটামিন C যা ত্বক কে ওই সমস্যা থেকে রক্ষা করে।
*গর্ভাবস্থায় পেয়ারা খাওয়ার উপকারিতা রয়েছে অনেক যেরকম, পেয়ারাতে রয়েছে ফলিক অ্যাসিড যা গর্ভাবস্থায় মায়ের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় এবং উপকারী তার কারণ ফলিক অ্যাসিড বাচ্চার স্নায়ুতন্ত্র বা নার্ভ সিস্টেমকে উন্নত করে এবং বিভিন্ন অক্ষমতা থেকে দূরে রাখে। ভিটামিন B যা আমাদের কোষ কে বিভাজিত হয়ে ডিএনএ (DNA) গঠন করতে সাহায্য করে।
*সকালে যদি আপনি পেয়ারা খান তাহলে আপনার এনার্জি বা শক্তি খুব দ্রুতগতিতে বেড়ে যায় তার ফলে সারাদিন কাজের জন্য ক্লান্তি লাগে না। এছাড়াও আপনি যদি প্রতিদিন সকালে ব্যায়াম বা এক্সারসাইজ করেন তাহলে আপনার পেশীতে ব্যথা বা টান লাগতে পারে এবং নিয়মিত পেয়ারা খেলে সেই ব্যথা কমে যায় তার কারণ পেয়ারাতে ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা আপনার পেশীকে শিথিল করে দেয়।
*পেয়ারাতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যেরকম লিউকোপিনি এবং ভিটামিন C ও অন্যান্য পলিফেনাল বা জৈব উপাদান যা আমাদের শরীরে ক্যান্সার সেল বা কোষ কে বাড়তে দেয় না এবং ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতাকে কম করে।
পেয়ারার অপকারিতা
*সাধারণত পেয়ারা খেলে কোন অসুবিধা হয় না। কিন্তু খালি পেটে খুব বেশি পেয়ারা খাওয়া উচিত না তার কারণ খালি পেটে খুব বেশি পেয়ারা খেলে পেটে ব্যথা হতে পারে।
*বিভিন্ন মানুষের ফলে বা সবজিতে অ্যালার্জি থাকে, তাই পেয়ারা খেলেও কিছু মানুষের অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে।
0 মন্তব্যসমূহ