স্ট্রবেরি আমাদের দেশে খুব পরিচিত নয়। কিন্তু স্ট্রবেরি দেখতে যেমন সুন্দর খেতেও অনেক সুস্বাদু। স্ট্রবেরি ফ্লেভার অনেকের কাছে পছন্দের। বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্যের মাঝে এর ফ্লেভার পাওয়া যায় যেমন জ্যাম, মিল্কশেক, চকোলেট, আইসক্রিম। স্ট্রবেরি থেকে তৈরি নানান ধরনের চকলেট যা খেতে অনেকটাই সুস্বাদু। বিশেষ করে বাচ্চাদের কাছে স্ট্রবেরি চকলেট অনেক জনপ্রিয়।জনপ্রিয় এই ফলটি উজ্জ্বলতায় অনেক টাই এগিয়ে। দেখতে লাল এর ঘ্রাণ অনেক সুন্দর। শুধু কি তাহলে এর ঘ্রাণ বা দেখতে সুন্দর তাই কি? অবশ্যই তা নয় এটি দেখতে যেমন সুন্দর। তেমনি পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফলটি।এই ফলের পুষ্টিগুন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেকটাই ভালো। এই ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন রয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক স্ট্রবেরির স্বাস্থ্য উপকারিতা কি কি? এই ফলটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা ভূমিকা রাখতে পারে তা অবশ্যই জেনে রাখা উচিত।আপনাদের বোঝানোর সুবিধার্থে কয়েকটি বিষয়ে বিভক্ত করে। আজকের এই পোস্টে স্ট্রবেরি স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে তুলে ধরাই হয়েছে। এর পাশাপাশি স্ট্রবেরি খাওয়ার নিয়ম, স্ট্রবেরি ফল কখন পাওয়া যায় আজকের এই পোস্টে আলোচনা করা হয়েছে।
স্ট্রবেরি খাওয়ার উপকারিতা
আমরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ফল খেয়ে থাকি। এর মাঝে উল্লেখযোগ্য আম, কাঁঠাল, লিচু, আনারস, আপেল, কমলা, মাল্টা আরো অনেক ফল। স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ার জন্য আমরা সুস্বাস্থ্যকর খাবার অনেকেই খেয়ে থাকি। আমরা যারা ফল খেতে পছন্দ করি এর মাঝে অনেকেই স্ট্রবেরি খেতে পছন্দ করি। দেখতে যেমন সুন্দর এর বেশ স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে যা আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন। স্ট্রবেরি খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা এখানে আলোচনা করেছে যা নিচে বর্ণনা করা হয়েছে।
হার্ট ভালো রাখে–
প্রত্যেকের জন্য হার্ট ভালো রাখা জরুরী এক্ষেত্রে অনেকটাই সাহায্য করে স্ট্রবেরি। স্ট্রবেরিতে থাকা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বীজ জোগায় ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডস।
দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্য–
শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়া হয়। এর মাঝে অনেক স্বাস্থ্যকর ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে থাকি। বয়সের সাথে সাথে হাড় ক্ষয় ও দাঁতের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। স্ট্রবেরি আপনার দাঁত ও হাড়ের সুরক্ষায় অনেক কার্যকরী। দাঁত ও হাড় নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকতে চাইলে খাওয়া উচিত স্ট্রবেরি।
ওজন কমায়–
শরীরের অতিরিক্ত মেদ এর কারণে খাদ্য তালিকা থেকে অনেক ধরনের খাবার সরিয়ে ফেলা হয়। ওজন কমাতে চাইলে খাদ্য তালিকায় স্ট্রবেরি রাখা উচিত। স্ট্রবেরিতে ক্যালরির মাত্রায় কম থাকায় শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও ফ্যাট বার্নিং হরমোন রয়েছে যা ওজন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে–
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে তোলা প্রত্যেকের জন্যই জরুরী যা সাহায্য করে স্ট্রবেরি। স্ট্রবেরিতে রয়েছে ভিটামিন সি। প্রত্যেক দিন দুই কাপ স্ট্রবেরির জুস পান করলে শরীরে শতভাগ ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ হয়।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ রাখে–
ডায়াবেটিস রোগীদের এই ফলটি খাওয়া উচিত। যারা ডায়াবেটিসের কারণে অন্যান্য ফল খেতে পারেনা। তারা এই ফলটি খেতে পারবে। এই ফলে ফাইবার রয়েছে যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়–
রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে স্ট্রবেরি। স্ট্রবেরিতে থাকা পুষ্টি উপাদান ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়।
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে–
ক্যান্সার প্রতিরোধে স্ট্রবেরি এর কার্যকারিতা রয়েছে। স্ট্রবেরি ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধি রোধে সাহায্য করে। স্ট্রবেরি খেলে ক্যান্সারের কোষ গঠন হতে পারে না।
ঠান্ডা লাগার প্রবণতা দূর করে–
বিভিন্ন কারণে ঠান্ডা লাগে। এছাড়াও শরীরে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ দেখা যায় যা দূর করতে সাহায্য করে স্ট্রবেরি। স্ট্রবেরি খাবার মাধ্যমে ঠান্ডা জনিত সমস্যাগুলো দূর করা যায় এর পাশাপাশি বিভিন্ন রকম সংক্রমণ থেকে শরীরকে রক্ষা করে।
ত্বকের যত্নে–
স্ট্রবেরীতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি যা শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি। ত্বকের যত্নেও অনেক কার্যকরী। এটি বয়সের ছাপ কমাতেও দারুণ কার্যকর।
চুলের যত্নে–
চুল পড়া সমস্যা অনেকেরই আছে। স্ট্রবেরিতে থাকা ফলিক অ্যাসিড, বি৫, বি৬ এর ফলে চুলের গোড়া শক্ত হয় চুল পড়ার সমস্যা দূর হয়।
রক্তচাপ কমায়–
রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখা জরুরি এক্ষেত্রে সাহায্য করে স্ট্রবেরি। স্ট্রবেরিতে রয়েছে পটাশিয়াম যা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে। এর ফলে উচ্চ রক্তচাপের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।এছাড়াও স্ট্রবেরিতে প্রচুর ভিটামিন এ, সি ফোলেট, ফসফরাস আর ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায়। সারা দিনে গোটা তিন-চার স্ট্রবেরি খেতে পারলেই আপনার ভিটামিন সি লক্ষ্যমাত্রার দিকে অনেকটা এগিয়ে যেতে পারবেন।তাই বলা যায় স্ট্রবেরির এই পুষ্টিগুণ পাওয়ার জন্য আমাদের খাদ্য তালিকায় এই ফলটি রাখা উচিত। এর পাশাপাশি যে সকল খাবার দ্বারা শরীর স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায় ওই ধরনের খাবার খাওয়া উচিত।
0 মন্তব্যসমূহ