আমাদের দেশের দীর্ঘদিনের একটি আলোচিত বিষয় বেকারত্ব। কাজের অভাবে অনেকেই হতাশায় ভোগেন। কিন্তু হতাশায় ভুগে থেমে গেলে বেকারত্ব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে নিজেকে দক্ষ করে তোলার মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব। তবে এজন্য দরকার কঠিন পরিশ্রম ও ধৈর্য। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শেষ করে বাংলাদেশে অনেক মানুষ বেকার থাকেন। সাধারণ চাকরির বাজারে যোগ্য অনেক প্রার্থী রয়েছেন যা চাকরি পাওয়াকে আরও কঠিন করে তোলে। আর তাই আমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হবে এ ব্যাপারে। নতুন পথে উপার্জনের মাধ্যমেই বেকারত্ব ঘোচানো সম্ভব। আর সেই নতুন পথের সন্ধান দেয় আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি।আজকের এই পোস্টে আমরা আলোচনা করবো বেকারত্ব ঘোচানোর বেশ কিছু উপায় নিয়ে। মূলত প্রযুক্তি ও কম্পিউটার ব্যবহার করে বেকারত্ব ঘুচিয়ে আয়ের পথে আসবার বিভিন্ন উপায় নিয়েই এখানে আলোচনা করা হবে। বেকারত্ব সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে আধুনিক প্রযুক্তি বড় একটি ভূমিকা রাখতে পারে। কীভাবে এই প্রযুক্তির ব্যবহার বেকারত্ব হতে মুক্তি পেতে সাহায্য করতে পারে সে বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা থাকবে এখানে।
নিজেকে জানা
বেকারত্ব দূর করার ক্ষেত্রে প্রথম ধাপ নিজেকে জানা। আপনি কী করতে পছন্দ করেন সে বিষয়ে নিজেকে আগে পরিষ্কার ধারণা রাখতে হবে। কাজের ক্ষেত্রে কাজকে উপভোগ না করলে সফল হওয়া কঠিন হয়ে যায়। আর তাই নিজের ক্ষমতা ও নিজের পছন্দগুলোকে আলাদা করা জরুরি।কাজের ক্ষেত্রে কোন কাজকেই ছোট করে দেখা উচিত নয়। সব কাজের ক্ষেত্রেই সফল হওয়া সম্ভব সেখানে সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে পারলে। কাজেই আপনি যে কাজ করতে পছন্দ করেন সেটি নিয়েই ভাবা শুরু করুন। এরপর খোঁজ-খবর ও তথ্য সংগ্রহ করুন সে কাজের ব্যাপারে। অর্থাৎ এই কাজ করতে কী কী বিষয়ে আপনাকে উন্নতি আনতে হবে বা কী দক্ষতার দরকার হবে।এসব তথ্য সহজেই জানতে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারেন। ইন্টারনেট হচ্ছে পৃথিবীর সকল কিছুর তথ্য ভান্ডার। কাজেই আপনি আপনার পছন্দের কাজের ব্যাপারে বিভিন্ন টিউটোরিয়াল, গাইড ইত্যাদি ইন্টারনেট থেকে অনেক সময় বিনামূল্যেই পেয়ে যেতে পারেন। এক্ষেত্রে গুগল সার্চ, ইউটিউব, উইকিপিডিয়ার মতো ওয়েবসাইটগুলো অনেক কাজে লাগতে পারে। জেনে নিন আপনার পছন্দের কাজের চাহিদা কেমন বা সফল হতে কী কী করা দরকার হবে। এরপরই একটি পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলতে পারেন এই কাজের মাধ্যমে সফলতা অর্জনে।
দক্ষতা অর্জন করা
বেকারত্ব দূর করতে দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আপনাকে তাত্ত্বিক জ্ঞান দিয়ে থাকে। সঠিক দক্ষতা অর্জন করতে হলে নিজেকেই এই ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে আপনার পছন্দের কাজের দক্ষতার ক্ষেত্রে নজর দিন। সব কাজের জন্যই আলাদা আলাদা বিভিন্ন দক্ষতার দরকার হয়ে থাকে।তবে কিছু দক্ষতা আছে যা এই যুগে এসে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কাজে লাগে। যেমন ইংরেজি ভাষার দক্ষতা, কম্পিউটার চালনায় দক্ষতা। এসব দক্ষতা আপনি সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে অর্জন করতে পারেন। অনলাইনে ফ্রিতেই বিভিন্ন ইংরেজি কোর্স ও কম্পিউটার কোর্স পেতে পারেন। এছাড়া বিভিন্ন কাজের জন্য বিশেষ দক্ষতার ব্যাপারেও জেনে নিয়ে সেই অনুযায়ী অনলাইন কোর্স করতে পারেন। এতে করে ঘরে বসেই নিজেকে দক্ষ করে তোলা সম্ভব হবে।
যুগের সাথে নিজেকে পরিবর্তন
সময় খুব দ্রুতগতিতে বদলায়। প্রযুক্তির এই যুগে এসে তা আরও বেড়েছে। নিয়মিত নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাবে সকল কিছুই পরিবর্তিত হচ্ছে খুব দ্রুত। একারণেই দক্ষতা অর্জন করে থেমে থাকা উচিত নয়। সময়ের সাথে নতুন নতুন দক্ষতা ও নতুন প্রযুক্তির সাথে মানিয়ে নেয়া উচিত। নাহলে বেকারত্ব পুনরায় দেখা দিতে পারে। নিজের ক্রমাগত উন্নতির মাধ্যমেই সফলতাকে ধরে রাখা সম্ভব।বর্তমানে স্মার্টফোনের যুগে এসে স্মার্টফোনের সঠিক ব্যবহার না জানলে পিছিয়ে থাকতে হবে অনেকটাই। এছাড়াও নতুন বিভিন্ন মাধ্যমের সাথেও খাপ খাইয়ে নেয়া উচিত। পেশাদারি কাজে বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হয়ে উঠছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহার সঠিকভাবে জেনে নেয়া উচিত এই সময়ে। এরকম আরও অনেক নতুন নতুন ব্যাপার আমাদের সামনে আসবে। সকল কিছু সম্পর্কেই পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখা দরকার। ইন্টারনেটের যুগে এসব ব্যাপারে জেনে নেয়া বেশ সহজ। কাজেই নিজেকে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আপডেট করতে হবে নিয়মিত।
আয়ের বিভিন্ন উপায় খোলা রাখা
নিজেকে কোন একটি আয়ের দিকে সীমাবদ্ধ না রেখে আরও বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে ধারণা রাখা উচিত। অনেক সময় একটি বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করলে সেই কাজের চাহিদা কমে গেলে বেকারত্ব নতুন করে দেখা দেয়। কাজেই আয়ের বিভিন্ন পথ খোলা রাখা উচিত। আর তাই দরকার আয়ের বিভিন্ন পথ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখা। অনলাইনে আয়ের ক্ষেত্রে আপনি আয়ের বিভিন্ন উপায় সম্পর্কে জেনে রাখতে পারেন। নিজেকে ধীরে ধীরে বিভিন্ন ব্যাপারে দক্ষ করে তুলে আয়ের পরিধি বাড়াতে পারেন।অনলাইনে আয়ের বিভিন্ন পথ জেনে নিতে আমাদের ওয়েবসাইট দেখতে পারেন। এছাড়া ওয়েব সার্চ ও অন্যান্য বিভিন্ন উৎস থেকে এই ব্যাপারে নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন।
শেষ কথা,
এভাবেই নিজের নিয়মিত উন্নতির মাধ্যমে বেকারত্ব দূর করা সম্ভব হয়ে। বেকারত্ব থেকে মুক্তির ক্ষেত্রে পরিশ্রম ও ধৈর্যের বিকল্প নেই। সেই সঙ্গে থাকতে হবে আত্মবিশ্বাস। কেননা যে কোন কাজেই সফলতা পেতে সময় লাগে। এক্ষেত্রে থেমে গেলে হতাশা গ্রাস করতে পারে। তাই থেমে না গিয়ে কঠোর পরিশ্রম করে যাওয়া উচিত সবসময়। অলসতা বেকারত্ব বৃদ্ধি করে। তাই অলস বসে থেকে সময় নষ্ট না করে নিজের দক্ষতা বৃদ্ধি করা উচিত সবসময়। তবেই বেকারত্ব দূর করে সহজে সফল হওয়া সম্ভব।
0 মন্তব্যসমূহ